Sunday , May 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিএনপি কি তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতবিরোধী অবস্থান নিল? কী করতে যাচ্ছে বিএনপি?

বিএনপি কি তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতবিরোধী অবস্থান নিল? কী করতে যাচ্ছে বিএনপি?

গত বুধবার ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে বাংলাদেশে কয়েকদিন ধরে যে প্রচারণা চলছে, তাতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিএনপির এক মুখপাত্র। এরপর দলটির ভারতবিরোধী বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি কি তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতবিরোধী অবস্থান নিল? দলীয়ভাবেই ভারতীয় পণ্য বর্জন প্রচারণায় জড়িয়ে পড়ল? এ নিয়ে দলের ভেতরেও নানা আলোচনা আছে। ভারতের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান আসলে কী তা নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তিও আছে।

ফলে ভারত সম্পর্কে ঐক্যবদ্ধ বক্তব্য আসছে না। বিষয়টি সুরাহার জন্য দলের স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয়ভাবে ভারতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরোধী অবস্থান ধরে রাখতে চান শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

তবে সেটি শুধু বিরোধিতার অর্থে নয়।

দেশের স্বার্থ ও সার্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে কৌশল নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন তারা।
গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভারতের অবস্থান জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন করেনি বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। দুই দেশের জনগণের সম্পর্কের পরিবর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর হয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি গুলশানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করেন বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

দলটির নেতার সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে ভারতের প্রসঙ্গ তুলে আনেন এই নেতা। তার বক্তব্যের সাথে একমত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপির ভারতবিরোধী কৌশলগত অবস্থানকে সমর্থন করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা গনমাধ্যমকে বলেন, সীমান্ত হত্যা, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বাণিজ্যিক বৈষম্য, রাজনীতিতে হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি ভারতবিরোধী অবস্থান গড়ে তোলার পক্ষে নেতাদের প্রায় সবাই একমত। তা ছাড়া ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভারতবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গিকে বিএনপি সব সময় সমর্থন জানিয়েছিল। সেই রাজনীতির ধারাটা আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

কয়েকদিন আগেও ভারত ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানানো তাদের পক্ষে এত সহজ ছিল না বলে মনে করছেন দলের সিনিয়র নেতারা। নির্বাচনের আগে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভারতবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার পর সেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। নির্বাচনের আগে একাধিক ঘটনা এবং সীমান্তে বিএসএফের হাতে এক বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।

বিএনপির উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভারতীয় উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে দেশটি যে শর্ত দিয়েছে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। বিএনপির নেতৃত্ব ও দেশের অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু বিষয় সামনে আনা হয়, যা কৌশলগত কারণে বিএনপি মেনে নিতে পারেনি। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা এড়াতে ওই সব শর্ত দেওয়া হয়েছিল বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন। ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর ভারতের কাছে প্রতিক্রিয়াহীন থাকা বিএনপির পক্ষে সম্ভব হয়নি।

বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু গনমাধ্যমকে বলেন, অনেক কিছু বদলাতে পারলেও প্রতিবেশী পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, এটি বাস্তবতা। আবার ভারত বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ, সেটিও অস্বীকার করা সম্ভব নয়। সব দিক বিবেচনায় আমরা এই গণতান্ত্রিক প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক সব সময় ভালো রাখতে চাই।’

আবদুল আউয়াল মিন্টু আরোও বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকারকে ভারত সমর্থন ও সহযোগিতা করায় দেশে স্বৈরাচার কায়েম হয়েছে। জনগণ ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছে। এসব কারণে দেশের জনগণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জনগণের দল হিসেবে বিএনপি জনগণের দাবি, মতামত ও বিবেচনাকে উপেক্ষা করতে পারে না, তাই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ভারতের উচিত পূর্ণ সহযোগিতা করা।

About Nasimul Islam

Check Also

অবন্তিকার পর এবার একই পথে হাঁটল মীম

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আ/ত্মহত্যা করেছে। শিক্ষার্থীর নাম শারভীন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *