Thursday , May 9 2024
Breaking News
Home / Law / খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু, ২ চিকিৎসকের জন্য আদালত থেকে এল যে নির্দেশ

খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু, ২ চিকিৎসকের জন্য আদালত থেকে এল যে নির্দেশ

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আহনাফ তাহমিন আয়হাম (১০) খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসককে দুই দিন করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক রুহুল আমিন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।

আসামিরা হলেন, জেএস হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির ও ডা. মাহাবুব মোর্শেদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক এশারত আলী জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদনের শুনানি করেন। পরে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসককে দুই দিন কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন আদালত।

জানা গেছে, মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারের অর্থোপেডিক অ্যান্ড ট্রমা সার্জন ডা. এসএম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার রাতে শিশুটির খতনা করাতে আসেন আইহামের বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি। রাত আটটার দিকে খতনার জন্য অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি আহনাফার। ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও আহনাফকে সম্পূর্ণ অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তার জ্ঞান ফেরেনি।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আহনাফকে তার বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানা এলাকার জেএস হাসপাতালের চিকিৎসক এসএম মুক্তাদিরের কাছে খৎনা করাতে নিয়ে যান। সে সময় তিনি কিছু পরীক্ষা লিখেছিলেন। তিনি ওই হাসপাতালে পরীক্ষা করেন এবং ছেলেকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। রাতে ডাক্তার ডেকে বললেন রিপোর্ট ভালো। সুন্নতে কোন সমস্যা নেই।

পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ছেলের খতনা করাতে স্ত্রী খায়রুন নাহারকে নিয়ে হাসপাতালে যান তিনি। পরে ছেলেটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্তরা জানান যে তাদের 20 থেকে 25 মিনিট সময় লাগবে। আহনাফের বাবা-মা বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর তিনি রুমের দরজায় ধাক্কা দিলে তারা বলেন, আরও কিছু সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা অতিবাহিত হলে আহনাফের বাবা ফখরুল তাকে রুমে ঢুকতে নিষেধ করেন এবং আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন।

পরে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে কক্ষে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি তার ছেলেকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে বুক চেপে ধরে এবং নাক-মুখ থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। এরপর চিকিৎসক এসএম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। ছেলের এই অবস্থা দেখে তারা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এরপর তাকে (বাবা ফখরুল আলম) ওই কক্ষ থেকে জোর করে বের করে দেন। দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ছেলের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে তারা দেরি করতে থাকে। পরে জোর করে কক্ষে ঢুকে ফখরুল জানতে পারেন তার ছেলে আহনাফ মারা গেছে।

About Zahid Hasan

Check Also

যুবলীগ নেতার পরিবর্তে জেলে অন্যজন, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

মাদক মামলায় যুবলীগ নেতা নাজমুলের পরিবর্তে মিরাজুল কারাগারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, তারা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *