Monday , May 20 2024
Breaking News
Home / Politics / আরও ছোট হয়ে যাচ্ছে বিএনপি জোট, কারন জানালো সরে যাওয়া দলগুলো

আরও ছোট হয়ে যাচ্ছে বিএনপি জোট, কারন জানালো সরে যাওয়া দলগুলো

দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সুপ্ত থাকা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছোট থেকেও ছোট হচ্ছে। বিশেষভাবে বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে আর থাকতে চাইছে না, অনেকগুলো চলেও গিয়েছে। প্রথম যে কারন সেটা হলো, দীর্ঘ সময় ধরে জোটের নেতাদের নিয়ে কোনো বৈঠক না হওয়া এবং তাদের কর্মকান্ডের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকা, দ্বিতীয়ত, সরকারের পক্ষ হতে চা’পের কারণে, তৃতীয়ত বিলম্বহীন রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, প্র’লো/ভন দেখানো এবং সেই সাথে আরো অনেকগুলো কারণে এই দলগুলো বিএনপি জোট ত্যাগ করছে।। আরেকটি বিশেষ যে কারণ, রয়েছে সেটি হলো, বিএনপি ২০ দলীয় জোট হিসেবে থাকতে তেমন আগ্রহী নয়। সব মিলিয়ে এই জোটের শরিকরা হ/তা’শ।

খিলাফত মজলিস ১ অক্টোবর শেষবারের দল হিসেবে ২০ দলীয় জোট ত্যাগ করে। এর আগে, কওমি আলেমের পুরনো দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ জোট ছেড়ে যায়। খিলাফাহ মজলিস ছিল ২০ দলীয় জোটে সর্বশেষ নিবন্ধিত ধর্মীয় দল।

এর বাইরে যে কয়টি ধর্মভিত্তিক দল জোটে আছে, সেগুলো মূলত এর আগে বেরিয়ে যাওয়া দলগুলোর খ’ণ্ডিত অংশ। জামায়াতে ইসলামী (হাইকোর্টের আদেশে নিবন্ধন বাতিল), ইসলামী ঐক্যজোট (আবদুর রকিব) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (মনসুরুল হাসান) আরেকটি অংশ ২০ দলীয় জোটে থাকলেও তাদের নিবন্ধন নেই। জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি গনমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারের চা’পেই জোট ছাড়ছে শরিকরা। আমরা মনে করি, সরকারবিরো’/ধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে অনৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা চলছে, এটা তারই অংশ।’

খেলাফত মজলিস গত শুক্রবার জোট ছেড়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন ও ২০ দলীয় জোট অকার্যকর বলে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০ দলীয় জোটে তাদের মতোই আমরাও (বিএনপি) একটি পার্টি। এখানে সবারই কাজ করার অধিকার রয়েছে। তারা কেন কাজ করেনি। নিষ্ক্রিয়তা জোট ছাড়ার কারণ হতে পারে না।’

বর্তমানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন এই জোটে নিবন্ধিত দল রয়েছে পাঁচটি। এগুলো হচ্ছে বিএনপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা (একাংশ), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, কল্যাণ পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। অন্য দলগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), লেবার পার্টি, ইসলামী পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, পিপলস পার্টি, ডেমোক্রেটিক লীগ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), সাম্যবাদী দল ও এলডিপির (একাংশ) নিবন্ধন নেই।

১৯৯৯ সালের ৬ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম এবং ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হককে সঙ্গে নিয়ে চারদলীয় জোট গঠন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জোট থেকে বেরিয়ে এরশাদ ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অংশীদার হন। ২০০৯ সাল থেকেই তিনি এবং তাঁর দল ক্ষমতার ভাগীদার। এরপর ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ১৮ দলীয় জোট। পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দল যোগ দিলে তা পরিণত হয় ২০ দলীয় জোটে। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় দল, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ ও মাইনোরিটি জনতা পার্টির যোগদানের মধ্য দিয়ে জোটের শরিক সংখ্যা বেড়ে ২৩ হয়। অবশ্য পরে পিপলস পার্টি বিলুপ্ত, বিজেপির জোট ত্যাগ ও একটি দলের অস্তিত্ব না থাকায় জোটের শরিক ফের ২০ দলে দাঁড়ায়। সব মিলিয়ে বিএনপিতে নিবন্ধিত দল ছিল আটটি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিজেপি (পার্থ), খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বের হয়ে যাওয়ায় নিবন্ধিত দল রয়েছে পাঁচটি।

এদিকে জোটের আরেক শরিক কল্যাণ পার্টিও ২০ দল ছেড়ে যাওয়ার হুঁ’/শি’য়ারি দিয়েছে বিএনপিকে। ২০১৯ সালের জুনের শেষে অলি আহমদের নেতৃত্বে ২০ দলের কয়েকটি শরিক দল মিলে গঠন করা হয় ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে একটি মোর্চা। এই মোর্চায় কল্যাণ পার্টিও আছে।

গত ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা সত্ত্বেও, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি জোটের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠনে দল বেশি মনোযোগী। সেটাও এখন অকা’র্যকর। ২০-দলীয় জোটের সর্বশেষ ভার্চুয়াল বৈঠক গত ৫ জুলাই, ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

জানতে চাইলে এলডিপি চেয়ারম্যান মো. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘খেলাফত মজলিসের নেওয়া সিদ্ধান্তের পর তাদের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। জব’রদ’/স্তির প্রশ্নই আসে না। ‘

মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক যিনি খিলাফত মজলিসের আমীর হিসেবে রয়েছেন তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় গনমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক জোট সাধারন কোনো একটি ই’স্যুকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়। জোট কখনও স্থায়ী কোনো বিষয় নয়, কারন এটা কোন উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠানো হয়। আমি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ২০ দলীয় জোটে ছিলাম। ২০১৯ সাল হতে, ২০-দলীয় জোটের ভেতর কেমন যেন একটি ছাড়া ছাড়া পরিবেশ বিরাজ করছে, যেটা অনেকটা যার যার তার তার অবস্থ। নেই কোন দৃশ্যমান রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং তৎপরতা। আমরা একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে নিজেদের মতো করে মাঠে ভূমিকা রাখবার জন্য জোটের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেছি। ‘

 

 

 

About

Check Also

‘আ.লীগ রঙ দেখছে, কিন্তু রঙের ডিব্বা দেখেনি’ দল যে সিদ্ধান্ত নেবে মাথা পেতে নেব

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *