জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন চলবে। বৃহস্পতিবার কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এসেছি। আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য এসেছি। পুলিশ আমাদের ওপর যে হামলা চালিয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে অরাজকতা ও অন্যায়। আমরা কাউকে আক্রমণ করতে আসিনি বা কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসিনি। আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। দাবি আদায় হলেই আমরা ফিরবো।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এখান থেকে সরাতে চাইলে পরিস্থিতি ভালো হবে না। আমার সামনে কেউ আমার শিক্ষার্থীদের আঘাত করতে পারবে না।”
এই সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন— “আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়”, “বাজেট কাটছাঁট চলবে না”, “হামলার বিচার চাই”।
প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছেন। ক্লান্ত হলেও কেউ আন্দোলন থেকে সরে যাননি। কেউ কেউ রাস্তায় রাত কাটিয়ে সকালে আবারও অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি হলো—
২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোন কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পটি একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
বুধবার সকাল ১১টায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশে লং মার্চ শুরু করেন। গুলিস্তান ও মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের কাছে পৌঁছালে দুপুর ১২:৪০ মিনিটে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। পরিস্থিতি ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোঁড়া হয়। এরপর লাঠিচার্জ করা হয়, যাতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
রাতের দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ সংবাদ ব্রিফিং করতে আসলে শিক্ষার্থীরা তার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হন। তারা “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে একজন আন্দোলনকারী মাহফুজের দিকে বোতল ছুঁড়ে মারেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাহফুজ ব্রিফিং বন্ধ করে স্থান ত্যাগ করেন।
তার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান করেন।

