Thursday , December 12 2024
Breaking News
Home / Countrywide / পিরোজপুরে ধর্মের কথা বলে ১০ হাজার গ্রাহকের পাঁচহাজার কোটি টাকা নিয়ে উধাও

পিরোজপুরে ধর্মের কথা বলে ১০ হাজার গ্রাহকের পাঁচহাজার কোটি টাকা নিয়ে উধাও

প্রতারণা বর্তমান সময়ে মানুষের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে পারাটাই যেন তাদের এখন প্রতিনিয়ত পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রাম গঞ্জের সহজ সরল মানুষদের বিশ্বাস নিয়ে তারা প্রতিনিয়ত খেলছে কিছু কিছু ভুয়া বেনামী প্রতিষ্ঠান গড়ে তারা অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এবং সর্ব শান্ত হচ্ছে অনেকে

অধিক মুনাফার প্রলোভনে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছে এহ্সান গ্রুপ র ১০ হাজার গ্রাহক। গচ্ছিত রাখা এসব টাকা উদ্ধারের জন্য সংস্থাটির কাছে বারবার ধরনা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকরা। প্রতিকার পেতে নিয়মিত চলছে মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি। আর বরাবরের মতো জেলা প্রশাসন বলছে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিরোজপুর সদরের খলিশাখালী এলাকার আব্দুর রব খানের বড় ছেলে মুফতি রাগীব আহসান ২০১০ সাল থেকে এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামের একটি এমএলএম কোম্পানি শুরু করে। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার প্রতিশ্রুতি ও ইসলাম ধর্মের নানা কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ শুরু করেন প্রতিষ্ঠানটির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। এক লাখ টাকার বিপরীতে গ্রাহকদের মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ১০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় পাঁচহাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, ঠিক ১৩-১৪ বছর আগে একটি মসজিদে নামমাত্র বেতনে ইমামতি করতেন মুফতি রাগীব আহসান। পরে ইমামতি ছেড়ে যোগ দেন একটি এমএলএম কোম্পানিতে। সেখানে প্রাথমিক সদস্য হিসেবে চাকরি নেন। পরবর্তীতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই পিরোজপুরে এহ্সান রিয়েল এস্টেট নামে একটি কোম্পানি গড়ে তুলেন । পরবর্তীতে যা এহ্সান গ্রুপ পিরোজপুর বাংলাদেশ নামে পরিচিতি পায়। এর অধীনে রাগীব গড়ে তোলে ১৪টি প্রতিষ্ঠান।

এ প্রতারক রাগীব শুধু পিরোজপুর জেলায়ই নন প্রতারণার জাল পাতেন ঝালকাঠি, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, পটুয়াখালীসহ আশেপাশের প্রায় ২০টি জেলায়। প্রতিষ্ঠানটির নিয়মই ছিল একজন গ্রাহক আরো কযেকজন নতুন গ্রাহককে জোগাড় করে দিবে। এতে এই গ্রাহকও পাবেন পাসেন্টিজ (%)।

আবুল কালাম ও মসজিদের ইমাম রফিক মোল্লাসহ বেশকিছু ক্ষতিগ্রাস্ত গ্রাহক জানান, শুরুর পর কয়েক বছর ঠিকমত গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেন স্বাভাবিক রাখলেও, প্রায় ২ বছর ধরে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে টালবাহনা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগও বন্ধ রাখা হয়েছে। এরপর তাদের অফিসের কার্যক্রমও বন্ধ করে লাপাত্তা প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও কর্মচারীরা।

গ্রাহকরা আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রতারক রাগীব আহসান বর্তমানে আত্মগোপনে থাকলেও তিনি ঠিকই বাংলাদেশে আছে। পুলিশ-প্রশাসন চাইলেই অভিযান চালিয়ে ধরতে পারে। কেন প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সেটা নিয়ে হতাশ তারা। এদিকে নিজেদের গচ্ছিত টাকা না পেয়ে অসহায় ভুক্তভোগী মানুষগুলোর মাঝে বিরাজ করছে অজানা আতঙ্ক।

এহ্সান গ্রুপের অধীন একটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সমবায় অধিদফতর থেকে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহে অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমবায় অফিসার মো. মুজিবুল হক।

এদিকে এহসান গ্রুপের জালিয়াতির এ বিষয়টি তদন্তে ধরা পড়েছে বলে জানান প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির সদস্য ও পিরোজপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুনিরুজ্জামান নাসিম আলী ।

তবে সমবায় দফতর থেকে নেয়া লাইসেন্সের শর্ত ভঙ করে আমানত সংগ্রহ করায় তা গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন। পাশাপাশি জনগণকে তাদের সঙ্গে লেনদেন না করার আহ্বানও জানান তিনি।

তবে অভিযোগের বিষয়ে এহসান গ্রুপের কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের জোর দাবি সরকার তাদের গচ্ছিত রাখা টাকা ফিরিয়ে দিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

গ্রাম অঞ্চলে দেখা যায় মানুষের মধ্যে সরলতা এখনো বিদ্যমান রয়েছে যার ফলে প্রতারকচক্র সেখানে গিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে পারছে খুব সহজে এবং তাদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এক্ষেত্রে যারা গ্রামের মানুষ রয়েছে তারাও অধিক মুনাফার লোভে পড়ে তাদের সর্বস্ব হারাচ্ছে

About

Check Also

১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু, প্রবাসীদের বড় ‘সুখবর’ দিলেন আসিফ নজরুল

বর্তমানে পাসপোর্টের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে একটি বড় সংকট চলছে। এই সমস্যা বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *