Sunday , December 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রডের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রডের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের নিত্যেপ্রয়োজনীয় পন্যের বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বেহস কিছু নিত্যেপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম। এরই মধ্যে আবার বৃদ্ধি পেয়েছে ডিজেল এবং কেরোসিন তেলের দাম। এবার মূল্য বৃদ্ধির তালিকায় উঠলো নির্মাণসামগ্রীর দাম। প্রথমবারের মত দেশের ইতিহাসে রডের দাম বৃদ্ধিতে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত উঠে এলো প্রকাশ্যে।

লাগামহীনভাবে বাড়ছে রডের দাম। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রডের দাম বেড়েছে ৭ হাজার টাকা। গত এক বছরে রডের দাম ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রথম দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এই নির্মাণসামগ্রীর দাম। রডের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম এবং জাহাজ ভাড়া ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ক/রো/নার প্রভাব কাটিয়ে বিশ্বে নির্মাণকাজ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা অনুসারে কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। নির্মাণকাজের ভরা মৌসুম হওয়াতেও এখন রডের চাহিদা বেশি। এসব কারণে দেশের বাজারেও রডের দাম বেড়েছে। কাঁচামালের দাম না কমলে সামনের মাসগুলোতে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, এখন ভালো মানের (৬০ গ্রেডের ওপরে) এক টন রডের দাম খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৮১ হাজার টাকা। এর আগে দেশে রডের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ওয়ান/ইলেভেনের (২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া স/হিং/সতা-হা/না/হা/নি) সময়। সে সময় দেশজুড়ে দেখা দেওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে এক টন রড বিক্রি হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। রডের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে বেড়েছে তেল ও গ্যাসের দাম। পাশাপাশি জাহাজ ভাড়া বেড়েছে। সব মিলিয়ে রডের কাঁচামাল আমদানি করে আনতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। মূলত এ কারণেই রডের দাম বেড়েছে। তারা জানান, মহামারি করোনার কারণে নির্মাণকাজে কিছুটা ধীরগতি দেখা দিয়েছিল। তবে এখন নির্মাণকাজ অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বেড়েছে রডের চাহিদা। একদিকে স্ক্র্যাপের দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়তি চাহিদাও রডের দাম বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন (১৪ নভেম্বর) ভালো মানের বা ৬০ গ্রেডের এক টন রড কোম্পানিভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭৭ থেকে ৮১ হাজার টাকা। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহেই টনপ্রতি রডের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন হাজার টাকা।

রড উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপের প্রায় ৮০ শতাংশই আমদানি করা হয় আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে। বাকি ২০ শতাংশ আসে দেশীয় জাহাজ ভাঙা স্ক্র্যাপ থেকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উন্নত দেশগুলো এখন আর জাহাজ ভাঙতে চাচ্ছে না। ফলে দেশে জাহাজ ভাঙা স্ক্র্যাপের পরিমাণও কমে গেছে। এ ব্যাপারে কেএসআরএম গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রডের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপ ও স্ক্র্যাপ জাহাজের বুকিং দর বৃদ্ধি। ২০২০ সালে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম ছিল ২৬৫-২৭০ ডলার। কিন্তু বর্তমানে স্ক্র্যাপের বুকিং দর ৬০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

গোটা বিশ্ব বৈশ্বিক মহামারির কবলে পড়েছে। এই চলমান সংকটে বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্ব জুড়ে নানা ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। এবং লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক ধরনের পন্যের দাম। তবে চলমান সংকটময় পরিস্তিতি মোকাবিলায় বিশ্বের প্রত্যেক দেশই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

About

Check Also

হাসিনাকে গার্ড করতে গিয়ে আমরা অশান্তি চাই না, ও দেশে ফেরত যাক

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার পতন ঘটে। এর পর থেকে তিনি পার্শ্ববর্তী দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *