আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জনমানুষের প্রত্যাশা থাকে যে তাঁরা আইনের রক্ষাকারী হয়ে জনগণকে সাহায্য করবেন। কিন্তু এর বদলে যখন তাঁরা আইনের ভক্ষক হয়ে জনগণের ক্ষতিসাধনের চেষ্টায় রত হন তখন তার চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারেনা।
এমনই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নে। চালকের চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে অটোরিকশা ছিনতাইকালে মো. জিয়াউদ্দিন পারভেজ (২৩) নামের এক পুলিশ সদস্যকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে তাঁকে বেঁধে পিটুনি দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। এ সময় তাঁর কাছে এক সেট পুলিশের ইউনিফর্ম পাওয়া যায়।
রবিবার রাতে চরফকিরা ইউনিয়নের ১৬ নম্বর স্লুইচ গেট সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
জিয়াউদ্দিন পারভেজ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হাইতকান্দি কচুয়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে এবং নোয়াখালী পুলিশ লাইন্সে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
জানা যায়, রবিবার রাত ৯টায় পুলিশ সদস্য জিয়াউদ্দিন পারভেজ পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার থেকে একটি অটোরিকশা ভাড়া নেন। ওই অটোরিকশা নিয়ে পার্শ্ববর্তী চরফকিরা ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় এসে চালকের চোখে-মুখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে রিকশা ছিনিয়ে নেন জিয়া। পরে রিকশা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তিযোদ্ধা বাজার এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। এ সময় ভুক্তভোগী চালকের চিৎকারে স্থানীয়রা ‘চোর পুলিশ সদস্য’কে হাতেনাতে আটক করে এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি মরিচের গুঁড়ার পলিথিন উদ্ধার করে। এ সময় তাঁকে বেঁধে পিটুনি দেয় এলাকাবাসী।
খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. সাজ্জাদ রোমন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১২টায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন বলেন, ‘মো. জিয়াউদ্দিন পারভেজ ৩ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনের ছুটিতে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বাড়িতে যান। ছুটি শেষে রবিবার নোয়াখালী যাওয়ার পথে অসৎ উদ্দেশ্যে কোম্পানীগঞ্জ আসেন বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
আইন সবার জন্য সমান বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং আরও জানান, পুলিশ সদস্য আটক হওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে যাদের প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্হা গৃহীত হবে।