Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Crime / তিন ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে রাজধানীর মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো

তিন ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে রাজধানীর মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো

বিভিন্ন ব্যক্তিকে ক্যারিয়ার বা বাহক হিসেবে ব্যবহার করে টেকনাফ থেকে ইয়াবা আনা হতো রাজধানী ঢাকায়। পরবর্তীতে শেওড়াপাড়ার তিনটি ভাড়া ফ্ল্যাটে সেসব ইয়াবাগুলো মজুদ করা হতো। বিক্রি করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো নারী সদস্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধূলা দিতে পেমেন্ট গ্রহণের জন্য বিক্রেতারা সড়কপথ পরিহার করে ঢাকায় আসতো আকাশপথে। শুধু তাই ই নয়, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগে তারা কোনো মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করত না। নির্দিষ্ট একটি অ্যাপ ব্যবহার করে মাদকের লেনদেন করে আসছিল।

দুই দিনের টানা অভিযানে মাদক ব্য়বসায়ী চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিএনসির ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান। আটক ওই ছয়জন হলেন- তানভির মাহমুদ, রবিন, ইব্রাহিম, ইয়াকুব, শামসুর আলম ও জবা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, প্রথমে তানভির মাহমুদ ও রবিনকে ভাটারা থেকে ৮০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ীদের একটি চক্রের নাম বলে এবং সেই চক্রের সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করছে বলে জানায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ব শেওড়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইব্রাহিম, ইয়াকুব, শামসুর ও জবাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৩২ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়। মাদকের এই চালানটি বুধবার রাতেই টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসে। আর ইব্রাহিম, ইয়াকুব ও শামসুরের বাড়ি টেকনাফে। ওই এলাকার মাদকের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যে তারা আছেন। ইয়াবার কোনো বড় চালান ঢাকায় অন্যজনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতেন তারা। পরে তারা পেমেন্ট নিতে বিমানে করে ঢাকায় আসতেন।

রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘ইয়াবা কারবারি ইব্রাহিম, ইয়াকুব ও শামসুল আলম টেকনাফের মূল হোতা। তারা অভিনব কৌশলে টেকনাফ থেকে ইয়াবার বড় চালান ঢাকায় আনেন এবং রাজধানীতে তাদের নির্ধারিত কয়েকজন লোকের মাধ্যমে মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এরা টেকনাফ থেকে মাদক ঢাকায় আনার ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার হিসেবে বিভিন্ন জনকে ব্যবহার করতেন, নিজেরা সরাসরি বহন করতেন না। ঢাকায় এ কাজে তারা জবা আক্তারের ভাড়া বাসা ব্যবহার করতেন।’

এছাড়াও তিনি জানান, ‘কারবারের নিরাপত্তার স্বার্থে জবা আক্তার পূর্ব শেওড়াপাড়া এলাকায় ৩টি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। বড় চালান মজুতের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাসা ব্যবহার করতেন। এই সিন্ডিকেটের সবাই গোপনীয়তার স্বার্থে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপস ব্যবহার করে।’

উল্লেখ্য়, ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ মামলা পাশ হয় যা পরবর্তীতে ২০২০ সালে সংশোধন করা হয়। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত চক্রটির সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্ধারিত আইনে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়।

About

Check Also

দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া সেই ‘ওসি হেলাল’ সম্পর্কে যা বললেন রনি

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন কলের মাধ্যমে ‘ওসি হেলাল’ পরিচয়ে দেখে নেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *