শেখ হাসিনার কোটি কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান! কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জে কি পেয়েছে তদন্ত দল?

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে পাঁচটি দেশে, যার মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ শাসিত ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ।

সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার এবং তাদের সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) ও একটি যৌথ তদন্ত দল অনুসন্ধান চালিয়ে অবৈধভাবে দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন সম্পদের সন্ধান পেয়েছে।

শফিকুল আলম আরও বলেন, বিএফআইইউ ও যৌথ তদন্ত দলের অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপ কেইম্যানের নাম উঠে এসেছে, যেখানে শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

এছাড়া, মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান ‘স্ল্যাশ ফান্ড’ এর অস্তিত্বও পাওয়া গেছে।

প্রেস সচিব বলেন, ১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬৩৫.১৪ কোটি টাকা, রাজউকের ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা (দলিল মূল্য) মূল্যের ৬০ কাঠা প্লট, ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমিসহ ৮টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে।

তাছাড়া, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। পরিবার সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিএফআইইউ দুটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়েছে এবং ১১টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার তথ্য সংগ্রহ করেছে। সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য দুদকে পাঠানো হয়েছে।


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গদি নিয়ে টানাটানি, ১৪৪ ধারা ভেঙে এগোচ্ছে শিক্ষার্থীরা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং ধর্ষণের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবিতে গণপদযাত্রার আয়োজন করেছে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্ল্যাটফরম’-এর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতাকে দায়ী করে তারা তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের কাছে পুলিশ পদযাত্রায় বাধা দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় বিক্ষোভকারীদের ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থামিয়ে দেওয়া হয় এবং একটি ছোট প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের হামলায় তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন, অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকেও সংঘর্ষে কয়েকজন সদস্য আহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘দেশে ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, আর এর দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’