বিএনপির সঙ্গে এনসিপির জোট নিয়ে যা বললেন সারজিস

গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশ হয়েছে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির জোট করার চিন্তা আছে কি না তা নিয়ে কালের কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

তিনি বলেন, কোনো একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলিত হয়ে রাজনীতি করা বা নির্বাচন করব—এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো পরিকল্পনা আমরা করিনি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

আমরা যেহেতু পুরো বাংলাদেশে গেড়ে বসা হাসিনার রেজিমের পতন ঘটাতে পেরেছি, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা আমাদের জায়গা থেকে বিশ্বাস করি, আমরা ৩০০ আসনে কাজ করতে পারব। তো সেই জায়গা থেকে এখন আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের কাছে যাওয়া, ৩০০ আসনে যাওয়া।

তিনি বলেন, আমাদের জায়গা থেকে ইলেকশনের আগে এটা নির্ধারণ করতে হবে, আমরা কোন পদ্ধতিতে ইলেকশনটি করব। কিন্তু আমরা মনে করি, এই তরুণ প্রজন্ম ৩০০ আসনের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ৩০০ জন মানুষ পাবে।

ধরেন কয়েক জায়গায় পেলাম না, কিন্তু এতেই তো সব কিছু শেষ না। এই পথচলা তো মাত্র শুরু।

তিনি আরো বলেন, আমরা এই পথচলায় চলতে প্রস্তুত এবং আমরা যদি সৎ থাকি, আমাদের যদি দেশপ্রেম থাকে, আমরা যদি ন্যায়নীতির পথে অটল থাকি, তাহলে আমরা সামগ্রিকভাবে শুধু এই ইলেকশন নয়; যেকোনো ইলেকশনে ফাইট দেওয়ার জন্য সচেষ্ট থাকব।


রিকশাচালককে জুতাপেটা, সেই সমাজসেবা কর্মকর্তার স্ট্যাটাস ভাইরাল

রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের রিকশাচালককে জুতাপেটার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার (১ মার্চ) এক চিঠিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রশাসক বিষয়টি নজরে এনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সমাজসেবা কর্মকর্তার কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান রাসেল এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে আঘাত করছেন। এরপর গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালকের শরীরে এবং রিকশায় আঘাত করতে দেখা যায় তাকে। পাশাপাশি, তিনি অশালীন ভাষায় গালাগালও করেছেন বলে ভিডিওতে শোনা যায়। ফুটেজ অনুযায়ী, এই ঘটনাটি ঘটেছে পহেলা ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর, রোববার (২ মার্চ) অফিসে যাননি জাহিদ হাসান। তিনি সোমবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত দুদিনের ছুটি নিয়েছেন।

এদিকে, নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি ঘটনার জন্য অনুতপ্ত বলে দাবি করেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “এমন ঘটনা কি কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি, কিন্তু এত বড় শাস্তি কি আমার পাওনা ছিল?” পাশাপাশি, তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চান।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, “ভিডিওটি আমরা দেখেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগকারী পাইনি। লিখিত অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।”

এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান বলেন, “ভিডিওটি আমরাও দেখেছি, এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে, এবং তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।