রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের রিকশাচালককে জুতাপেটার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আফিয়া আখতার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার (১ মার্চ) এক চিঠিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রশাসক বিষয়টি নজরে এনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সমাজসেবা কর্মকর্তার কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান রাসেল এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে আঘাত করছেন। এরপর গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালকের শরীরে এবং রিকশায় আঘাত করতে দেখা যায় তাকে। পাশাপাশি, তিনি অশালীন ভাষায় গালাগালও করেছেন বলে ভিডিওতে শোনা যায়। ফুটেজ অনুযায়ী, এই ঘটনাটি ঘটেছে পহেলা ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটে।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর, রোববার (২ মার্চ) অফিসে যাননি জাহিদ হাসান। তিনি সোমবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত দুদিনের ছুটি নিয়েছেন।
এদিকে, নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি ঘটনার জন্য অনুতপ্ত বলে দাবি করেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “এমন ঘটনা কি কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি, কিন্তু এত বড় শাস্তি কি আমার পাওনা ছিল?” পাশাপাশি, তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, “ভিডিওটি আমরা দেখেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগকারী পাইনি। লিখিত অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান বলেন, “ভিডিওটি আমরাও দেখেছি, এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে, এবং তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।