আওয়ামী লীগ এখনো ক্ষমা চায়নি, তাদের পাল্টা জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রমের ঘোষণা দেন।
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, “জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ এখনো তা অস্বীকার করছে। তারা ক্ষমা চায়নি। তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা সাংস্কৃতিক জবাব দিতে হবে।” তিনি আরো বলেন, “এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, বিপ্লবের পর একটি ‘কালচারাল ব্রিজ’ তৈরি করা। এই বাংলাদেশ সবার, এখানে ধর্ম, ভাষা, বা সংস্কৃতির ভিত্তিতে কাউকে আলাদা করা যাবে না। আমাদের সাংস্কৃতিক নীতির মূলে থাকবে সবার সংস্কৃতির সমান বিকাশ।”
ফারুকী উল্লেখ করেন, “আমরা এতকাল সংস্কৃতিকে সংকীর্ণভাবে দেখেছি। সংস্কৃতি বলতে শুধু গান-বাজনা, নাচ বা সিনেমা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য এর গণ্ডি পেরিয়ে সকলের জন্য সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টি করা।”
ঘোষিত সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’, ‘তারুণ্যের উৎসব’, ‘দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান’, ‘ডিজিটাল ওরাল হিস্ট্রি প্রকল্প’, ‘বাংলা একাডেমির সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালা ও গবেষণা’, ‘জাতীয় জাদুঘরে আধুনিক ভিডিও প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা স্থাপন’, এবং ‘শো-ক্রিয়েটর ওয়ার্কশপ’।
এই কার্যক্রমগুলো তরুণদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা জানান, ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৮ বিভাগে ৮টি ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরির কর্মশালা আয়োজন করা হবে। এর পাশাপাশি ৮টি নতুন থিয়েটার প্রোডাকশন এবং নজরুলের গানের একটি অ্যালবাম তৈরি করে তা প্রকাশ উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে কনসার্ট আয়োজন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আতাউর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, এবং নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলীসহ বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ফারুকী আশা প্রকাশ করেন, “সাতটি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অগ্রগতির নতুন অধ্যায় সূচিত হবে এবং দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক নতুন প্রাণের স্পন্দন তৈরি হবে।”