Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / International / ট্রাম্পের নতুন নীতি: জন্মসূত্রে আর নয় মার্কিন নাগরিকত্ব

ট্রাম্পের নতুন নীতি: জন্মসূত্রে আর নয় মার্কিন নাগরিকত্ব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়কে তার রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প একাধিক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি ছিল—জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব প্রদান বন্ধ করা। ফলে গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসী ভারতীয়দের সন্তানরাও আগামী দিনে জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাবে না।

অফিসিয়াল ট্রাম্প-ভ্যান্স প্রচারাভিযানের সাইটে পোস্ট করা পরিকল্পনাটির বাস্তবায়নের জন্য একদিনের মধ্যেই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট । শুধু অবৈধ অভিবাসীদের জন্যই এটি মাথাব্যথার কারণ নয় বরং খসড়া নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, “আমেরিকায় জন্মালেই কোনও শিশুকে আর নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। সন্তানের পিতামাতার মধ্যে যেকোনও একজনকে মার্কিন নাগরিক হতে হবে। অথবা থাকতে হবে গ্রিন কার্ড। তবেই তাদের সন্তানরা আগামী দিনে আমেরিকার নাগরিক হতে পারবে।’

নতুন নীতির আওতায়, ভারতীয় অভিবাসীরা যারা গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন, তাদের সন্তানদের জন্য নাগরিকত্বের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে, যারা বর্তমানে গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় আছেন, তাদের সন্তানরা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে পারবে না।

ইমিগ্রেশন আইনজীবী রাজীব এস খান্না টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপটি মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর লঙ্ঘন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে সুপ্রিম কোর্টে নির্দিষ্ট রায় রয়েছে।” অপরদিকে, অভিবাসন বিশেষজ্ঞ গ্রেগ সিসকিন্ডও একই মত প্রকাশ করেছেন, “এটি অবশ্যই ১৪তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। তবে, এটি আইনগতভাবে কতটা বাস্তবায়িত হতে পারে, তা দেখতে হবে।”

২০২২ সালের জনগণনা অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লক্ষ ভারতীয় বসবাস করছেন, এর মধ্যে ১৬ লক্ষের বেশি ব্যক্তি মার্কিন মুলুকে জন্মগ্রহণ করেছেন। ট্রাম্পের নতুন নীতি অনুযায়ী, তারা কেউই মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন না, কারণ তাদের পিতামাতা মার্কিন নাগরিক নয় অথবা তাদের গ্রিন কার্ড নেই।

এছাড়া, মার্কিন কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য বার্ষিক ১৪০,০০০টি ভিসা বরাদ্দ করা হয়েছে, এবং কোনও একটি দেশ প্রতি বছর সাত শতাংশের বেশি গ্রিন কার্ড পেতে পারে না। এই নিষেধাজ্ঞা ভারতীয়দের জন্য বিশেষভাবে প্রভাবশালী হতে পারে, কারণ ভারতীয় আবেদনকারীদের জন্য গ্রিন কার্ডের ব্যাকলগ ২০২৩ সালের মার্চে এক মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৪.১৪ লক্ষ ভারতীয় গ্রিন কার্ড পাওয়ার আগেই মারা যেতে পারে, এবং এক লক্ষেরও বেশি শিশু তাদের বয়স ২১ বছর অতিক্রম করে যাওয়ার পর আর গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবে না।

এই নতুন নিয়মের ফলে ভারতীয় অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, এবং বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন, তাদের জন্য আরও বেশি অশনি সংকেত রয়েছে।

About Nasimul Islam

Check Also

হাসিনার ট্রাভেল ডকুমেন্টে কী লিখেছে ভারত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি টানা চারবার ক্ষমতায় ছিলেন, বর্তমানে ভারতীয় মাটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *