আমার বিশ্বাসে সরীসৃপ প্রজাতির গায়ক এবং বাংলার হিমেশ রেশমিয়া শুভ্রদেবকে একুশে পদক দেয়াটা টোটালি অপাত্রে দান হয়েছে। একুশে পদককে তামাশার বস্তু বানানোটা খুব অপছন্দ করেছি। লিখতে চাইনি এ নিয়ে। কিন্তু শুভ্রদেবকে নাক ফুলিয়ে বড়াই করতে দেখে লিখতে বাধ্য হয়েছি। অন্য শিল্পীরা সুর তোলেন গলা দিয়ে। শুভ্রদেব সুর তোলেন নাক দিয়ে।। শুভ্রদেবের ‘বুকের জমিন’ অ্যালবামের কয়েকটি গান শ্রোতাদের কাছে সমাদৃত হয়েছিল। ছ্যাঁকা খাওয়া প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য কিছু চটুল গান তিনি গেয়েছেন। কিন্তু আমার কাছে তার গানগুলো খুবই গৎবাঁধা মনে হয়েছিল। মনোযোগী শ্রোতা হিসেবে দু’চারটে গান ছাড়া তার গানে নতুনত্ব পাইনি তেমন। যদিও একশ্রেণির মানুষের কাছে শুভ্রদেবের গান জনপ্রিয় ছিল। যেমন, গার্মেন্টস শ্রেণির ছ্যাঁকামাইসিন খাওয়া শ্রমিকরা বেশি কিনতো তার অ্যালবামগুলো। প্রণব ঘোষের সুরারোপিত চটুল সুরের গান গেয়ে শুভ্রদেব জনপ্রিয় হয়েছেন। তার গায়কীর একটা দিক আমাকে বেশি ইরিটেট করতো। সেটা হল গান গাওয়ার সময় তিনি ন্যাকামি করতেন। যার ফলে তার গাওয়া “কোনো এক সন্ধ্যায় হাজার আতসবাজি আর সানাইয়ের সুরে” ছাড়া আর কোনো গান আমার কাছে হার্ট টাচি মনে হয়নি। এইগান হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত ধারাবাহিক ‘কোথাও কেউ নেই’-তে সুবর্ণা মোস্তফার উপর প্রদর্শিত হয়েছিল।
আমাদের সংগীত ভূবনে শুভ্রদেবের কি অবদান আছে হালকা আর ওয়েটলেস গান গাওয়া ছাড়া?বিদেশে কনসার্ট করতে যাওয়ার নামে চুটিয়ে আদম ব্যবসা করে অজস্র টাকা কামিয়েছেন। শুভ্রদেব স্মার্ট ব্যক্তি। কোন পথে হাঁটলে তার ফায়দা হবে সেটা ভালো জানতেন। তার প্রথম তেল মারার হাতেখড়ি হয় ATN বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে দিয়ে। এরপর সুযোগ বুঝে তেল মারতে শুরু করলেন সরকারি মহলে। বগলে তেলের বোতল নিয়ে সরকারের নানা শাখা প্রশাখায় বিচরণ শুরু করলেন। বহু পদোন্নতি হল তার। কিন্তু শ্রোতার হৃদয়ের দেয়াল ভাঙতে পারলেন না। একুশে পদক পেয়ে নানান ফিরিস্তি দিচ্ছেন শুভ্রদেব। একুশে পদক তারাই পাবে যাদের কণ্ঠে কালজয়ী গানের সৃষ্টি হয়েছে। শুভ্রদেব কোন ব্যাসিসে একুশে পদক পেলেন তা আজও আমার বোধগম্য নয়। তার গাওয়া কি কোনো দেশাত্মবোধক গান আছে?সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ যা লিখেছেন সবই বরাবর লিখেছেন। এরচেয়ে ভালো কাউকে লিখতে আমি দেখিনি। পদক পেয়ে শুভ্রদেবের নাকের ফুঁটোদুটো আরও ফুলে গেছে। তিনি তো ছেঁড়া ধ্যাতরা কাঁথায় শুয়ে নিজেকে মিলিয়ন ডলারের এ আর রাহমান ভাবতে শুরু করেছেন। এবার অপাত্রে দান করা হল একুশে পদক। শুভ্রদেবের চেয়ে ঢের যোগ্য শিল্পী আছেন। তাদেরকে মূল্যায়ন না করে তেলবাজ শুভ্রদেবকে মূল্যায়ন করে গুরুত্বপূর্ণ এই পদককে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
শুভ্রদেব যদি প্রিন্স মাহমুদের মত মেধাবী হতেন তাও মেনে নেয়া যেত। তিনি তো প্রিন্স মাহমুদের লেভেল জাজমেন্ট করার জন্য ইললিজিবল নন। সত্য সুন্দর বক্তব্য শেয়ার করে প্রিন্স মাহমুদ দারুন প্রশংসিত হয়েছেন। আর শুভ্রদেব তেল মারতে মারতে পিচ্ছিল বাঁশের আগায় উঠে লেজে ভর করে লাফাচ্ছেন। আরও কয়েক যুগ গান গাইলেও তিনি তপন চৌধুরী, নকীব খান, আইয়ুব বাচ্চু,জেমস,বাপ্পা মজুমদার,শাফিন আহমেদ,পার্থ বড়ুয়াদের সমকক্ষ হতে পারবেন না। শুভ্রদেবকে মনে রাখতে হবে তার কোমরের গিঁট লুজ। তিনি লুজ কোমর নিয়ে বেশিদিন চামচামি করতে পারবেন না। তার জনপ্রিয়তার বুনিয়াদ ঠনঠনে। বর্তমান প্রজন্ম শুভ্রদেবের গান শোনেনা। এই প্রজন্ম তাকে চেনেওনা। তারা জেমস,আইয়ুব বাচ্চু,নকিব খান,শাফিন আহমেদ,বাপ্পা মজুমদার,মাকসুদ,পার্থ বড়ুয়াদের গান শোনে। তাই শুভ্রদেবের মত ডিসগাস্টিং সিঙ্গারের মুখে বড় বড় কথা একদমই মানায় না। তাকে মনে রাখতে হবে যত পদোন্নতি তিনি পেয়েছেন সবই তেল মারার কারণে পেয়েছেন।
Check Also
যে কারণে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে বললেন সাংবাদিক ইলিয়াস
বিশিষ্ট সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার (২০ …