Sunday , December 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার কারণ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার কারণ জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইনের শাসন বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশের স্বার্থ এবং জননিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেনাবাহিনীকে দেওয়া এই ক্ষমতা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হবে, যেখানে সাধারণ প্রশাসনিক ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর নাও হতে পারে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে এই ক্ষমতার ব্যবহার জনগণের অধিকার এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান রেখেই হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেটি প্রু স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়।

সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধির, ১৮৯৮’ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

আইনের এসব ধারা অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাধারণ ক্ষমতা-

ধারা ৬৪ : ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার এবং হেফাজতে রাখার ক্ষমতা;

ধারা ৬৫ : গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা বা তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা যার জন্য, তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন;

ধারা ৮৩/৮৪/৮৬ : ওয়ারেন্ট অনুমোদন করার ক্ষমতা বা ওয়ারেন্টের অধীনে গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপসারণের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা;

ধারা ৯৫(২) : নথিপত্র ইত্যাদির জন্য ডাক ও টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুসন্ধান এবং আটক করার ক্ষমতা;

ধারা ১০০ : ভুলভাবে বন্দী ব্যক্তিদের হাজির করার জন্য অনুসন্ধান-ওয়ারেন্ট জারি করার ক্ষমতা;

ধারা ১০৫ : সরাসরি তল্লাশি করার ক্ষমতা, তার (ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি) উপস্থিতিতে যে কোনো স্থানে অনুসন্ধানের জন্য তিনি সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করতে পারেন;

ধারা ১০৭ : শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা;

ধারা ১০৯ : ভবঘুরে এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীর ক্ষমতা;

ধারা ১১০ : ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তা প্রয়োজনীয় ক্ষমতা;

ধারা ১২৬ : জামিনের নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা;

ধারা ১২৭ : বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদেশদানের ক্ষমতা;

ধারা ১২৮ : বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য বেসামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা;

ধারা ১৩০ : বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা;

ধারা ১৩৩ : স্থানীয় উপদ্রবে ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা;

ধারা ১৪২ : জনসাধারণের উপদ্রবের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা;

উল্লিখিত ক্ষমতাগুলি ছাড়াও, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর অধীনে যেকোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সরকার এবং সেইসাথে সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এই আইনের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তার উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধ বা ঘটনাস্থলে তাকে বা তার কাছে প্রকাশ করা অপরাধের স্বীকৃতি নিতে পারেন। অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির পর ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী অপরাধীকে সাজা দিতে পারেন, তবে কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে দুই বছরের বেশি নয়।

About Nasimul Islam

Check Also

গভীর রাতে র‍্যাব পরিচয়ে ফেরদৌসকে তুলে নিয়ে যায় কিছু যুবক, এরপর যা হলো

বগুড়ায় র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ফেরদৌস সরকারকে নরসিংদীর মাধবদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *