আহমেদ শরীফ। বাংলা রুপালী জগতের এক সময়ের ব্যাপক সাড়া জাগানো একজন অভিনেতা। ‘খল’ চরিত্রের মধ্য দিয়ে পর্দায় নিজেকে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। তবে বেশ কয়েক বছর হলো, অভিনয়ের পর্দা থেকে নিজেকে অনেকটা আড়াল করে নিয়েছেন কিংবদন্তি এই তারকা। জানা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি। এদিকে সম্পতি তিনি দেশে এসেছেন।
বুধবার (৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে এসেছিলেন আহমেদ শরীফ। সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ‘আমেরিকায় আমার সব আছে। আমার ওষুধ ফ্রি, চলাফেরা ফ্রি ও বাসস্থান ফ্রি। কিন্তু তবুও মনে হয় কিছুই নেই। মনে হয়, আমার ভেতরের হার্টটা খালি। চেনা চেহারাগুলো দেখতে পারি না।’
এই অভিনেতা যোগ করেন, ‘ওখানে বসে সবচেয়ে বড় যে কাজটা করতে পেরেছি, তা হলো- আমি বাংলায় কোরআন শরিফ পড়ে শেষ করেছি। কোরআন শরিফে কী নির্দেশ, আগে যখন ছেলেবেলায় পড়েছি কিছুই বুঝতাম না, এখন বাংলায় কোরআন পড়ে এইটুকু বলতে পারি প্রত্যেকটি আয়াত আমার কলবের মধ্যে ঢুকে গেছে আল্লাহ তায়ালা রাসুলকে (সা.) কী বলেছেন। মানুষের জন্য কোনটা উপকারী, কোনটা উপকারী না। কোন শাস্তি তিনি মানুষকে দেবেন। সবকিছু সেখানে আছে। ভেরি ক্লিয়ারলি বাংলায় লেখা আছে। বাংলায় কোরআন পড়ে এই বয়সে আমি অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি। আমি সেভাবেই দিনাতিপাত করছি। এখন নামাজ, কোরআন শরিফ পড়া, এগুলোই আমার সাথি।’
দীর্ঘ ৫০ বছর সিনেমার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আহমেদ শরিফ। তখনকার চিন্তাধারা আর বর্তমান চিন্তাধারা পাল্টেছে। আর তাই নিজের অভিনয় জীবন নিয়ে কোনো অনুতাপ আছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আল্লাহ মানুষকে রিজিক যেভাবে দিয়েছেন তার রিজিক সেভাবেই আসবে। কারণ, আমরা সবাই জানি রিজিকের মালিক হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা। তিনি আগে আমাকে সেভাবেই রিজিক দিয়েছিলেন। আমি সেভাবেই রিজিক গ্রহণ করেছি। পরবর্তীতে যখন আমি হজ করি তখন আমি আল্লাহর কাছে বলেছিলাম, আল্লাহ এই (সিনেমা) রিজিক আমার দরকার নেই। বন্ধ করে দেন। আল্লাহ তায়ালা কিন্তু বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি ওই রিজিক আর খাচ্ছি না। এখন আমি আমেরিকায় থাকছি, আমেরিকার সরকার যা দিচ্ছে খাচ্ছি। নিজের যা সঞ্চয় আছে খরচ করছি।’
প্রসঙ্গত, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ সিনেমায় নায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন আহমেদ শরীফ। তবে পরবর্তীতে ‘বন্দুক’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ‘খল’ চরিত্রে অভিনয় জীবন শুরু করেন তিনি। ক্যারিয়ারে প্রায় আট শতাধিক সিনেমা উপহার দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন সকলের মনে।