একটা সময়ে সিনেমার দিক থেকে বাংলাদেশের সিনেমা ছিল সবার উপরে। আর সেই সময়টাকে বলা হতো সিনেমা বা শোবিজের স্বর্ণযুগ। আর সেই স্বর্ণযুগেই নিজেদের জাত চিনিয়েছেন কিছু কিছু গুণি অভিনেতা। যারা এখন নুয়ে পড়েছেন বয়সের ভারে।বয়সের সংখ্যায় ৮০ পেরোলেন ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রবীর মিত্র। সেই হিসেবে প্রবীর মিত্র এখন ‘প্রবীণ’; দীর্ঘদিন নেই ক্যামেরার সামনে। সবশেষ গেল বছরের জুলাইয়ে গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন ৭৯ বছর বয়সে করোনাভাইরাস জয় করে।
আজ বুধবার (১৮ আগস্ট) ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’খ্যাত প্রবীর মিত্রের জন্মদিন। এমন দিনে কেমন আছেন এই অভিনেতা? সেই খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় কাবু প্রবীর মিত্র।
প্রবীর মিত্রের বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে তাঁর পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছেন উনি। আগে থেকে উনার হাঁটুতে যে ব্যথা ছিল, সেটা আছে; বয়সের জন্য কানেও কম শোনেন, চোখেও কম দেখেন। মানে বয়স হলে যেসব সমস্যা হয়, সেগুলোই আর কি।’
এখন কীভাবে সময় কাটান প্রবীর মিত্র, এমন প্রশ্নে পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিনের ভাষ্য, ‘বাসায় থাকেন। বেশির ভাগ সময় টিভি দেখে আর বই পড়ে সময় কাটে উনার।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষে একজন মাঝেমধ্যে উনার খোঁজখবর নেন বলেও জানিয়েছেন সোনিয়া ইয়াসমিন।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর মিত্র ‘লালকুটি’ থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ শিরোনামে সিনেমার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় তাঁর অভিষেক হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে নায়ক চরিত্রে দেখা গেলেও বেশির ভাগ সিনেমায় চরিত্রাভিনেতা হিসেবে দেখা মিলেছে তাঁর।
অভিনয়ের বাইরে প্রবীর মিত্র ষাট দশকে ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছেন, ছিলেন অধিনায়ক। একই সময় তিনি ফার্স্ট ডিভিশন হকি খেলেছেন ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এ ছাড়া কামাল স্পোর্টিংয়ের হয়ে সেকেন্ড ডিভিশন ফুটবলও খেলেছেন।
এর আগে এনটিভি অনলাইনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র জীবনের প্রাপ্তির গল্পে বলেছিলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা-শ্রদ্ধা পেয়েছি, এটাই আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া জীবনে তেমন কিছু আমি করতে পারিনি।’
বর্তমানে প্রবীর মিত্র বড়ই নিসঙ্গ ভাবে জীবনযাপন করে যাচ্ছেন। থাকছেন অনেকটা সময় ধরেই একা। তার সাথি সঙ্গীরাও ছেড়ে চলে গেছেন তাকে। আগের মত আর সেই উদ্যমও নেই তার। তারপরেও তিনি চেষ্টা করছেন জীবনের এই শেষ সময়ে এসে নিজের মত করে ভালো থাকার।