দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় সময় সংবাদ উঠে আসে বিয়ের দাবিতে তরুণী অনশন করে। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর প্রেমিক আর বিয়ে করতে রাজি হয় না। আর এই কারণে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে অনশান করে। এছাড়া অনেক সময় কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আর বিয়ে করতে চান না। এবার তেমনি এক অভিযোগ এনে বিয়ের দাবিতে অনশন করছে এক কলেজ ছাত্রী। আর এই ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে। এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ্যে এলো।
বিয়ের দাবিতে এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে অনশন করছেন কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সন্ধা থেকে ওই মেয়েটি ওই ইউপি সদস্যের বাড়ির বাইরে পড়ে থাকায় এলাকায় ক্ষো’ভে’র সৃষ্টি হয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য নুর ইসলামের (৪০) বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়সূত্র ও ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের অবিবাহিত ইউপি সদস্য নুর ইসলাম বিয়ের প্রলোভনে ওই ছাত্রীর সাথে ৪ বছর থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর (২০) একাধিক বিয়ের সমন্ধ এলে নুর ইসলাম বিভিন্ন কথা বলে বিয়ের আয়োজন ভে”’ঙে দেন। তাকে বিয়ে করবে কথা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।
ইদানীং মেয়েটি বিয়ের কথা বললে নুর ইসলাম টালবাহানা করে সময় পার করতে থাকেন। একপর্যায়ে ছাত্রীটি ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। ঘটনার পর থেকে ওই ইউপি সদস্য আত্ম’গো’পনে রয়েছেন। ইউপি সদস্যের ভাই, ভাবি ও অন্যরা মেয়েটির গায়ে হাত দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সেই থেকে মেয়েটি ইউপি সদস্যের বাড়ির বাইরে আশ্রয় নেয়। মেয়েটির সাথে ইউপি সদস্য নুর ইসলামের একাধিক কথোপকথন (রেকর্ড) রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ নেওয়াজ নিশাদ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ইউপি সদস্য নুর ইসলামকে বুঝিয়ে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বলে জানা গেছে। অনশনরত ওই ছাত্রী জানায়, ‘আমি ইউপি সদস্য নুর ইসলামকে অনুরোধ করে অনেকবার নিষেধ করি। সে আমাকে দিনের পর দিন ডিস্টার্ব করে। আমার বিয়ের প্রস্তাব এলে সে ভে”’ঙে দেয়। বাধ্য হয়ে তার সাথে সম্পর্ক করি। আমার জীবন নষ্ট করে পরে ধরা দেয় না। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে আসতে বলে। এখন পালিয়েছে। আমি তাকে বিয়ে করতে চাই।
ইউপি সদস্য নুর ইসলামের সাথে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে কথা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ নেওয়াজ নিশাত বলেন, ইউপি সদস্য নুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং তার পরিবারকে নিয়ে কথা বলে কলেজছাত্রীর সাথে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি নাকি বিয়ে করবেন না। ভোর পর্যন্ত থেকে চলে আসি। বর্তমানে মেয়েটি ওই বাড়িতেই আছে।
এদিকে, ওই কলেজছাত্রী এখনো অনশন করে চলেছেন। তিনি বিয়ে না করা পর্যন্ত ওখান থেকে আসবেন না বলে জানান। ওই কলেজ ছাত্রীর অনশন দেখতে অনেক স্থান থেকে প্রায় সময় অসংখ্য মানুষ সেখানে হাজির হচ্ছেন। ও এলাকার সাধারণ মানুষ বলছেন এই ঘটনার সঠিক বিচার করা হোক। কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমিকার বিয়ের ব্যবস্থা করা হলে সঠিক বিচার করা হবে বলে মেন করেন অনেকে। বর্তমানে এই ঘটনা নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।