Saturday , December 14 2024
Breaking News
Home / National / অবশেষে প্রকাশ্যে এলো, ফেরির তেল চুরি করতে গিয়ে পদ্মা সেতুতে ধাক্কা

অবশেষে প্রকাশ্যে এলো, ফেরির তেল চুরি করতে গিয়ে পদ্মা সেতুতে ধাক্কা

গত কয়েকদিন আগে একটি ফেরি পদ্মা সেতুতে ধাক্কা দেয়। এই ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এমনকি ওই ফেরি যে চালাচ্ছিল তার দায়িত্ব নিয়েও নানা রকম প্রশ্ন ওঠে। ইতিমধ্যে ফেরি চালক কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া তদন্ত করা হচ্ছে কি কারণে ফেরিটি পদ্মা সেতুতে ধাক্কা লাগে। তবে এবার প্রকাশ্যে এলো, ফেরির তেল চুরি করতে গিয়ে পদ্মা সেতুতে ধাক্কা। এছাড়াও আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে।

তেল খরচ কমাতে সংক্ষিপ্ত পথে চলতে গিয়ে পদ্মা সেতুতে আ”ঘা”ত করে রো রো ফেরি শাহজালাল। স্রোতের অনুকূলে কম গতিতে চালাতে (২৫০ আরপিএম) গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে ধা’ক্কা দেয় ফেরিটি। অথচ স্রোতের বিপরীতে কিছুটা উপরের দিকে চালিয়ে পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ফাঁক দিয়ে নদী পাড়ি দিলে এ ঘটনা এড়াতে পারতেন ফেরির দুই চালক (মাস্টার ও সুকানি)। সেক্ষেত্রে পথটি দীর্ঘ হতো এবং গতিও বাড়াতে হতো। এতে তেল খরচ হতো বেশি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তেল বাঁচিয়ে তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

আরও জানা গেছে, ফেরির আঘাতে সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের ক্যাপে কিছুটা স্ক্যাচ পড়েছে। আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবি ফেরিটির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ডকইয়ার্ডে নিয়ে মেরামতের আগে এটি চলাচল করতে পারবে না।

এদিকে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে কৌশল নিয়েছেন ফেরির দুই চালক ও অন্যান্য স্টাফরা। সেতুতে আঘাত দেওয়ার আগে স্টিয়ারিং কাজ করছিল না বলে তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে দাবি করেন তারা। যদিও তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণে স্টিয়ারিং ভালো পাওয়া গেছে। তবে তারা ধীরগতিতে চালানোর কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ফেরির দুই চালককে (মাস্টার ও সুকানি) দায়ী করে প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, ফেরির ইঞ্জিন কম আরপিএমে (কম গতিতে) চালালে তেল খরচ কম হয়। এভাবে ফেরির জন্য বরাদ্দ করা তেল বাঁচিয়ে তা গোপনে বিক্রি করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তেল বিক্রির ওই টাকা ফেরির স্টাফসহ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক কর্মকর্তার পকেটে যায়। কয়েক বছর আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও তেল আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছিল। এবারের ঘটনায় জমা দিতে যাওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তেল বাঁচানোর বিষয়টি উঠে না এলেও কম গতিতে ফেরি চালানোর তথ্য উঠে আসছে। গতি কম ও স্রোত বেশি থাকায় সেতুর কাছে এসে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ হারান চালকেরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম শনিবার বলেন, পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির আ”ঘা”ত দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাইনি। কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারব। তিনি বলেন, ওই প্রতিবেদন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র:যুগান্তর

এদিকে, এই ফেরির ধাক্কায় পদ্মা সেতুর কোনো ক্ষতি না হলেও ফেরিতে থাকা অনেক মানুষের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চান সকল যাত্রী। এছাড়া যখন ওই ঘটনা ঘটে তখন ফেরিতে থাকা স্টাফরা কি ভূমিকা পালন করছিল তা নিয়েও নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। অনেক যাত্রী বলেছে ওই ঘটনার সময় ফেরির স্টাফরা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালোন করেননি। আর ফেরির স্টাফরা বলেছে ওই ঘটনার আগে ফেরির স্টিয়ারিং কাজ করছিল না এমন অজুহাত দিচ্ছে। বর্তমানে ওই ঘটনা আরও ভালো করে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

About

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *