সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি, এবং এর ফলে হোয়াইট হাউস তাকে বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই দাবি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই।
গুজবের সূত্রপাত
ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওতে বলা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো নথি পায়নি। এর ওপর ভিত্তি করে হোয়াইট হাউস তাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ খবরটি নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ‘দৈববাণী’ হিসেবে প্রচার করা শুরু করে। তাদের প্রচারণায় এমনভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়, যেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে তার পদে বহাল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো আসল সত্য
তথ্য যাচাইয়ে দেখা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি হোয়াইট হাউসের কোনো ঘোষণার নয়। এটি আসলে অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের একটি অধিবেশনের দৃশ্য। ভিডিওতে যিনি বক্তব্য রাখছিলেন তিনি হলেন ক্রিস বোয়েন, অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন, যেখানে শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশের কোনো প্রসঙ্গই ছিল না। একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা ভিডিওটিকে “সম্পূর্ণ মনগড়া ও ভুয়া প্রচারণা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন কোনো রাজনৈতিক দল সত্যের ওপর দাঁড়াতে পারে না, তখন তারা এমন গুজবের আশ্রয় নেয়। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে মিথ্যা ও প্রতারণার ওপর দাঁড়ানো রাজনীতি কখনো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।

