অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হটিয়ে ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আবারও ক্ষমতায় বসানোর প্ল্যান করছে একটি চক্র। একের পর এক চক্রান্ত চলছে, যা ধাপে ধাপে সাজানো এবং প্রতিটি ধাপেই ভয়ঙ্কর নাশকতার সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। তবে সম্প্রতি দেশপ্রেমিক সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একটি সমন্বিত টিম ছায়ায় থেকে তদারকি করে এই চক্রের “আগস্ট রিটার্ন হিট প্ল্যান” ভণ্ডুল করে দিয়েছে। কিন্তু চক্রান্তকারীরা এখনও হার মানেনি।
প্রথম পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও খেলা এখানেই শেষ নয়। রাজনৈতিক অন্ধকারের গোপন করিডরে বসে তারা ইতিমধ্যেই “হিট প্ল্যান-২” চালু করেছে, যার মূল সময়সীমা অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। এই তিন মাসকে বাংলাদেশের ওপর নতুন অস্থিরতা চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে সাজানো হচ্ছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এক শীর্ষ সূত্র নিশ্চিত করেছে, দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা প্রথম ধাপের তুলনায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, পরিকল্পনা-২ এর প্রথম পদক্ষেপ শুরু হবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে। সেখানকার কিছু কৌশলগত এলাকায় নাশকতা ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা অচল করে দেওয়ার চেষ্টা হবে। এই গোপন অভিযানের সমন্বয় করছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তার সঙ্গে আছেন কার্যত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুবুল আলম হানিফ, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আরও অনেকে।
যোগাযোগ ও সমন্বয়ের জন্য কলকাতা ও দিল্লিতে ইতিমধ্যেই দুটি গোপন কার্যালয় খোলা হয়েছে, যেখানে এই চক্র সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিছু ‘বেঈমান’ গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যারা আড়াল থেকে প্রয়োজনীয় রসদ ও গোপন তথ্য সরবরাহ করছে।
চক্রটি তিনটি মূল লক্ষ্য সামনে রেখে এগোচ্ছে— প্রথম লক্ষ্য ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করে দেওয়া। দ্বিতীয় লক্ষ্য যে কোনো মূল্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা ঠেকানো। আর তৃতীয়, সবচেয়ে বিপজ্জনক লক্ষ্য, দেশে এমন ধারাবাহিক ঘটনা ঘটানো, যা ধীরে ধীরে পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।
চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এমন এক “প্রতিবিপ্লবের আগুন” তৈরি করা, যেখানে শেখ হাসিনা নাটকীয়ভাবে ‘জনতার ত্রাণকর্তা’ রূপে ফিরে এসে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে পারেন।
“হিট প্ল্যান-২” ইতিমধ্যেই বাস্তবায়নের পথে—লজিস্টিক নেটওয়ার্ক, গোপন তহবিল ও অনুগত ক্যাডার বাহিনী প্রস্তুত করা হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের কিছু নদীবন্দর, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে প্রথম নাশকতার লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, ঢাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালানো ও সরকারবিরোধী ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক। প্রথম ধাপের মতো এবারও সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সমন্বিত “শ্যাডো টিম” প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর নজর রাখছে। তাদের হাতে রয়েছে যোগাযোগ ট্র্যাকিং সিস্টেম, ফিল্ড সোর্স এবং গোপন তথ্যদাতাদের নেটওয়ার্ক। তবে অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন, দ্বিতীয় ধাপের পরিকল্পনা অনেক বেশি কৌশলী, কারণ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আন্তর্জাতিক লবিং, সীমান্তপারের রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা এবং আর্থিক জোট।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য এটি এক বড় পরীক্ষা—তারা কি দ্বিতীয় দফার ঝড় আগেভাগেই থামাতে পারবে, নাকি ষড়যন্ত্রকারীরা সত্যিই দেশের রাজনৈতিক মানচিত্র পাল্টে দেবে? সময়ই এ প্রশ্নের উত্তর দেবে।
তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে ভয়াবহ হতে যাচ্ছে।

