গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই লুটিয়ে পড়লেন কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন

বাংলা সংগীতের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন দীর্ঘ এক বছর পর মঞ্চে ফিরে এলেও গান পরিবেশনের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েন।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন: আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগীতশিল্পী দিঠি আনোয়ার।

দিঠি আনোয়ার গণমাধ্যমকে জানান, সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও শঙ্কামুক্ত আছেন। তিনি বলেন, “অনেকদিন পর আন্টি মঞ্চে গান গাইতে উঠেছিলেন, কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে দ্রুত রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। এখন তিনি ভালো আছেন এবং চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি বাসায় ফিরবেন।”

এদিকে, সাবিনা ইয়াসমিনের মেয়ে ইয়াসমিন ফায়রুজ বাঁধন জানিয়েছেন, তার মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি এখন ভালো আছেন। চিকিৎসা শেষ হলে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্ন ও ব্রিসবেনে একাধিক স্টেজ শো করেন সাবিনা ইয়াসমিন। এরপর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মঞ্চ থেকে বিরত ছিলেন এবং চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আয়োজকদের মতে, দীর্ঘ এক বছর পর মঞ্চে ফেরা এই কিংবদন্তি শিল্পীর শনিবারও গান পরিবেশনের কথা ছিল।


পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি দুদক

দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালাতে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত মানসিক প্রতিবন্ধিতা, স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা, অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করা সূচনা ফাউন্ডেশনের কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি রেজিস্ট্রেশন হলেও গতকাল দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে পাওয়া ঠিকানায় দুদকের চার সদস্যের একটি দল গিয়ে দেখে, এটি ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার একটি বাসা ছাড়া কিছু নয়। সেখানে কোনো অফিসের নাম বা অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

অভিযান পরিচালনাকারী দলের নেতৃত্বে থাকা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায় ঘটনাস্থলে বলেন, ‘‘সূচনা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। প্রতিষ্ঠানের যে ঠিকানা আমরা পেয়েছি, তা হলো রোড নম্বর ৫, বাড়ি নম্বর ৫৪। সেখানে গিয়ে আমরা দেখেছি যে, প্রতিষ্ঠানটি এখানে নেই। মূলত, আমরা এখানে এসেছি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করতে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে ঢাকা জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করি। সেখানে যা ছিল, তা হলো ধানমণ্ডির এই ঠিকানা। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম, এই বাড়ির ঠিকানায় প্রতিষ্ঠানটি নেই।’’ তিনি জানান, এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই প্রতিষ্ঠানটি করমুক্ত সুবিধা পেয়েছে, যার বিষয়ে তাদের আরও তদন্ত করা হবে।

এর আগে, দুপুরে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের একটি দল অভিযান পরিচালনার জন্য ধানমণ্ডি-৫ নম্বর রোডে যায়। তবে সেখানে ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের হদিস তারা পায়নি। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘‘সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে সূচনা ফাউন্ডেশনের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।’’

উল্লেখ্য, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক। দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন যখন তাকে এই পদে মনোনীত করা হয় এবং তার দেয়া তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে, এবং তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে উপঢৌকন ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

সূচনা ফাউন্ডেশন ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, যা মানসিক প্রতিবন্ধিতা, স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা, অটিজম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যুক্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করে। সায়মা ওয়াজেদ এর প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। গত ২৫শে নভেম্বর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে, এবং তাদের বিরুদ্ধে আরও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।