শপথ নেওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করলেন ট্রাম্প

সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ নেওয়ার পরই তিনি এই আদেশ জারি করেন, যা আগামী ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। তবে এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক তহবিল ব্যবস্থাপনায় কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কারণ দেশটির অনেক কর্মসূচি ইতোমধ্যেই কংগ্রেসের অনুমোদন পেয়েছে এবং তহবিল বিতরণ বা ব্যয় হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর দিনটি নির্বাহী আদেশে ভরিয়ে দেন ট্রাম্প। বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত ছাড়াও মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, পানামা খালের পুনর্নিয়ন্ত্রণ, এবং বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন তিনি।

ট্রাম্প তার প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বৈদেশিক সহায়তা দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এর আগে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কংগ্রেসে শুনানির সময় বৈদেশিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি জানতে চান, এই সহায়তা কি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার জন্য ফেডারেল বাজেটের প্রায় এক শতাংশ ব্যয় হয়। তবে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই এই খাতে বরাদ্দ নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন। বিশেষত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনকে দেওয়া বিপুল সামরিক সহায়তা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বাইডেন প্রশাসনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে দুর্যোগ ত্রাণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং গণতন্ত্র পন্থি উদ্যোগের জন্য প্রায় ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করেছে। এই সহায়তার প্রধান প্রাপক দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েল, মিশর এবং জর্ডান রয়েছে। ইসরায়েল বছরে ৩৩০ কোটি ডলার, মিশর ১৫০ কোটি ডলার এবং জর্ডান ১৭০ কোটি ডলার সহায়তা পেয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির কারণে এই দেশগুলোতে সহায়তার পরিমাণে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদিও তার প্রশাসনের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া, বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক সম্পর্ক এবং মার্কিন কৌশলগত অবস্থানে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে।

Scroll to Top