বাইরের দেশ থেকে পুলিশ এনে ছাত্রদের মারা হয়েছে (ভিডিও সহ)

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে রাজপথে নামতে শুরু করেছেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে র‌্যালি ও মানববন্ধন করেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২ আগস্ট) গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পী সমাজের ব্যানারে আরেকটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃষ্টিস্নাত এই প্রতিবাদ সমাবেশে বড়সড় তারকার উপস্থিতি না দেখা গেলেও পুরো আয়োজনটি হয়ে উঠেছিল নান্দনিক। তারা সরকারের প্রতি অনাস্থা ও প্রতিটি হত্যার বিচার দাবি করছে। এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় ইউটিউবার হিরো আলম।

এসময় বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং কোটা সংস্কার আন্দোলন রুখতে বাইরের দেশ থেকে পুলিশ এনে ছাত্রদের মারা হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা ছাত্রলীগ নেতার পোস্ট ভাইরাল

গত বুধবার সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় হট্টগোল হয়। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান এবং হই-হুল্লোড়ের পর অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে সভাস্থল ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কোটা আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠক ডেকেছিলেন ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সভা শেষে বের হওয়ার সময় ফ্রন্টে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ওবায়দুল কাদেরকে ‘ভুয়া-ভুয়া’ বলে চিৎকার করেন। একই সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক তার ছেলের দেওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় তোপের মুখে পড়েন। কয়েকজন ছাত্রনেতা তাকে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি এখানে কেন?’ এ ঘটনার পর একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যকরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন ছাত্রলীগের এক নেতা। ছাত্রলীগ নেতার নাম আব্দুর রাজ্জাক রাজ। তিনি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সভাপতি।

স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলো ধরা হলো-

‘আপনার পাশে একজন সৈয়দ আশরাফ কই? মাথার উপরে একজন জিল্লুর রহমান কই? হাতটা আকড়ে ধরার জন্য একজন সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া, সাহেরা খাতুন কই? মানববর্ম তৈরি করার জন্য একজন হানিফ আর মায়া ভাই কই? সাহস, ধৈর্য আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে সংকট মোকাবিলা করার জন্য একেকজন রাজ্জাক, তোফায়েল, আমু, সুরঞ্জিত কই? বুক পেতে দেওয়ার জন্য একজন সোহেল তাজ কই? আপনার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদ-পদবি যে কেজি দরে বেচা-বিক্রি হয় আপনি কি জানেন? মাঠে শিবির-ছাত্রদলের মতো প্রতিপক্ষ রেখে আপনার অঙ্গসংগঠন যে ধান কাটা, ফুটবল, ক্রিকেট খেলা, গাছ লাগানোর মতো ফুটেজসর্বস্ব রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েছে সে বিষয়টা কি ভাবেন? অনুপ্রবেশ হতে হতে যে ঠগ বাছতে গা উজাড় হওয়ার দশা সেই খোঁজ কি রাখেন? দলের জন্য জীবন বাজি রাখতে যেসব নেতাকর্মী প্রস্তুত তারা যে দলের সর্বস্তরে কোণঠাসা সেই খোঁজ কি রাখেন? নেতাকর্মীরা দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মন খুলে দুই মিনিট কথা বলতে পারেন না, তিনি যে সবার প্রতি সব সময় ক্ষোভ-বিরক্তি প্রদর্শন করেন তা কি জানেন? তেলবাজ সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, নায়ক-নায়িকা-এরা যে আপনার জন্য, দলের জন্য, সরকারের জন্য কতো ক্ষতিকর তা কি জানেন? এরা যে কোনো মুহূর্তের মধ্যে ১৮০ ডিগ্রি পল্টি নেবে তা কি জানেন? আদর্শিক নেতাদের বাদ দিয়ে তারকাদের মনোনয়ন দেওয়ার ফল যে দুঃসময়ে কতো ভয়ঙ্কর তা কি জানেন?

আপনি একা সবকিছু দেখতে গিয়ে বাকি সবার গায়ে যে ১৫ বছরের তেল-চর্বি-কোলেস্টেরলের পাহাড় জমেছে তা কি জানেন? আপনার ওপর সবকিছু চাপিয়ে দিয়ে তারা যে মহাসুখে লুটপাটে ব্যস্ত সে কথা জানেন? আপনি মূলতঃ একা, ভীষণ একা! একা আর কতো লড়বেন? শিক্ষা নেবেন নাকি সবকিছু আগের মতোই চলতে দেবেন? সারা বাংলাদেশের সব অঙ্গ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের পদ পদবি টাকা ছাড়া দেওয়া হয় না তা কি জানেন। কোনো কোনো আসনে কত টাকার বিনিময়ে নমিনেশন বাণিজ্য করেছে তার সঠিক তদন্ত করুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’। ছাত্রলীগ আব্দুর রাজ্জাক রাজের স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে নানা মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা। জাগোনিউজ২৪.কমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. সালাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘আমার এলাকার এক ছাত্রলীগ নেতার অনেকগুলো প্রশ্ন। উত্তর জানা থাকলে দিয়েন। আমার জানা নেই।’ বরুড়া উপজেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিরাজ বলেছেন, ‘এক বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করতে হয়ে যায় এমপি আর যেই লোক বরুড়াতে জীবনে জয় বাংলা স্লোগান দেয় নাই সে হয় উপজেলা চেয়ারম্যান- এই হলো আওয়ামী লীগ’। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন সমর্থক লিখেছেন, ‘প্রতিবাদী লেখনীর জন্য ধন্যবাদ’ শাহিন নামের একজন লিখেছেন, ‘সঠিক সময়ে সঠিক বার্তা’

রফিকুল ইসলাম নয়ন লিখেছেন, ‘ক্ষমতা পেয়ে শুধু নমিনেশন বিক্রি কমিটি বিক্রি করে কর্মী মূল্যায়ন ভুলে যাওয়ার ফল এখন দিচ্ছে মাহবুব মুন্সী নামে আরেজন লিখেছেন, ‘ভাই কি বলতাম। এই লোকটা যা করেছে তার খেসারত নেত্রীকে দিতে হচ্ছে। উনার অবদান অস্বীকার করছি না।তবে গত দুই মেয়াদে প্রচুর উলটপালট করে দিয়েছে’।