Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Crime / ৫ লাখ গ্রাহকের কোটি টাকা’ মেরে পরিবারসহ কানাডায় পাড়ি ব্যাংক কর্মকর্তার

৫ লাখ গ্রাহকের কোটি টাকা’ মেরে পরিবারসহ কানাডায় পাড়ি ব্যাংক কর্মকর্তার

ব্যাংকের ৫ লাখ গ্রাহকের ও কোটি কোটি টাকা নিয়ে কানাডা চলে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ফয়েজ আহমেদ নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ফয়েজ আহমেদ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জনতা ব্যাংক শাখার কর্মকর্তা। সে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের মৃত জয়নাল জমাদারের একমাত্র ছেলে।

একই সঙ্গে তিনি ৫ দিনের ছুটি নিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কানাডায় গেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে গ্রাহকরা এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ না দিলেও প্রতিদিনই ব্যাংক ম্যানেজার ও ফয়েজের বাড়িতে বিক্ষোভ করছেন তারা।

এদিকে, পাঁচ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ না করায় এবং পাঁচ দিনের ছুটির পরও ব্যাংকে হাজির না হওয়ায় ব্যাংক ব্যবস্থাপক ফয়েজের মালিকানাধীন বাড়ির সামনে মার্কেটে নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার। তবে দুই মাসেও তাকে বরখাস্ত করেনি তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন গ্রাহক জানান, ফয়েজ আহমেদ গত ৬ বছর ধরে জনতা ব্যাংক রায়পুর শাখার সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, ফয়েজকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (৬০টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) শিক্ষকদের ঋণ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের অগোচরে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে ২ থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ করে ব্যাংকের সিল-স্বাক্ষর মেরে গ্রাহকদের চেক বই দিতেন। এছাড়াও একইভাবে নিজ এলাকার মানুষ, আত্মীয়-স্বজন, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীর লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

রায়পুর ইউপির দেবীপুর গ্রামের সায়েস্তানগর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রেজোয়ান জানান, ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ফোন করে বলেন, ১০ লাখ টাকার কিস্তি দিচ্ছেন না কেন? এতে আমি হতাশ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম ১০ লাখ টাকা, কিস্তি কত? তখন অফিসার ফোন কেটে দেন। তখনই আমি বুঝতে পারি যে ফায়েজ আমার অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা তুলে নিয়েছে।

শুধু রেজওয়ান নন, শায়েস্তানগর গ্রামের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন, মো: নাসির, ব্যবসায়ী ইব্রাহিম, আলাউদ্দিনসহ শতাধিক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে মুনাফার লোভে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে স্ত্রী-সন্তানসহ কানাডায় পাড়ি জমান তিনি।

অনেকে বলছেন, ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়েজ সবসময় অনলাইন ডলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

পলাতক ব্যাংক কর্মকর্তা ফয়েজের মামা নজরুল জমাদার জানান, ফয়েজের স্ত্রী অন্তু ও এক শিশুপুত্র চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গেছেন। তিনি ভারত না কানাডায় গিয়েছেন তা আমি জানি না। তিনিও আমাদের জানাননি। তার সাথে ঈদের আগে কথা হয়েছে, আর যোগাযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, এলাকার ১৫-২০ জনসহ অনেকেই আমার কাছে এসে অভিযোগ করেছেন। তবে ফয়েজ ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা লোন নিয়ে বাড়ির সামনে মার্কেট করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাংক থেকে লোক এসে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।

জনতা ব্যাংকের রায়পুর শাখার ব্যবস্থাপক তারেক মোহাম্মদ মুছা জানান, লোন অফিসার ফয়েজ আহমেদ তার স্ত্রীর ভারতে চিকিৎসার জন্য গত (২৬ মে) ৫ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। গত এক মাস ধরে তিনি ব্যাংকে আসছেন না। ব্যাংক তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ঋণ পাবে। এ জন্য তাকে নোটিশ পাঠানো হয় এবং তার মালিকানাধীন পাঁচ রুমের মার্কেটের সামনে তার বাড়ির সামনে একটি নোটিশ বোর্ড লাগানো হয়। সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শারমিন ভাটের আমলে ফয়েজ এ কাজ করেন। আমি দুই মাস আগে জয়েন করেছি।

তবে তিনি ব্যাংকের গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি বলে দাবি করেন। এ ছাড়া ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপক শারমিন ভাট দাবি করেন, তিনি ফয়েজ ব্যাংকের কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেননি।

রায়পুরা থানার ওসি ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, জনতা ব্যাংকের ঋণ কর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Nasimul Islam

Check Also

দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া সেই ‘ওসি হেলাল’ সম্পর্কে যা বললেন রনি

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন কলের মাধ্যমে ‘ওসি হেলাল’ পরিচয়ে দেখে নেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *