চারদিন আগে করা হয়েছে বহিষ্কার আর এটা জানতেন না দুই পরীক্ষার্থী। তারা না জেনেই পরীক্ষায় অংশ নিতে আসে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পার হলে তারা দুজন জানতে পারে যে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ (রবিবার) অর্থাৎ ২১ নভেম্বর জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলাধীন ছালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে, ফয়জুল ওয়াসিমা নাহাত যিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সরিষাবাড়ীর সালেশা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি (ভোক) ট্রেড-১২ পত্র পরীক্ষার সময় পরিদর্শন করেন। সেই সময় তিনি উপজেলার শেখ খলিলুর রহমান ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের (ফুড প্রসেসিং) এক শিক্ষার্থী ও চর বাঙ্গালী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের (ড্রেস মেকিং) আরেক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অসাদুপায় অবলম্বন (নকল) করতে দেখেন।
পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বহিষ্কার করতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্র সচিব ওয়াজেদা পারভীনকে নির্দেশ দেন। কিন্তু কেন্দ্র সচিব এ নির্দেশ পালনে গড়িমসি করেন এবং বহিষ্কৃতদের উত্তরপত্র সব উত্তরপত্রের সঙ্গেই বোর্ডে পাঠিয়ে দেন। পরদিন বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা কেন্দ্র সচিব ওয়াজেদা পারভীনের বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ অমান্য করার দায়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দা’য়ের করেন।
এদিকে পরবর্তীতে ওই পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার কার্যকর করা হলেও তারা বিষয়টি জানতো না। পরীক্ষার্থী দু’জন রোববার পরীক্ষা দিতে আসে। যথারীতি কক্ষ পরিদর্শকের কাছ থেকে খাতা নিয়ে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লিখে উত্তরপত্রের বৃত্ত ভরাট করে তারা। বিষয়টি কেন্দ্র সচিবের কানে যাওয়ার পর তাদের কাছ থেকে উত্তরপত্র ও এডমিট কার্ড নিয়ে নেন কক্ষ পরিদর্শক।
পরীক্ষার্থীরা জানান, বহিষ্কার করা হয়েছে নাকি ১৬ তারিখে, ৪ দিন পরে কেন জানলাম! তাও খাতায় লেখা শুরু করার পর খাতা নিয়ে নেয়া হয়। এ কথা বলেই তারা কাঁদতে থাকেন।
এ ধরনের বিষয় সংগঠিত হওয়ার পর অভিযুক্ত ওয়াজেদা পারভীন যিনি কেন্দ্র সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে রয়েছেন তিনি বলেন, বহিষ্কারের প্রক্রিয়াটি বুঝতে না পারার কারনে প্রথম দিন তাই কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। ওই দিন পরীক্ষার্থীদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি যার কারনে পরীক্ষার হলে এসে প্রবেশপত্র নিয়ে নেওয়া হয় কিন্তু তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে এটি করা হয়।
উপমা ফারিসা যিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা পালন করতে তিনি অবহেলার করেছেন এই জন্য কেন্দ্রীয় সচিবের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক স্যারের নিকট একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারই সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে। কিন্তু বহিষ্কার হওয়া পরীক্ষার্থীদের কেন উত্তরপত্র লেখার সুযোগ দেওয়া হলো সেটা কোনোভাবে বুঝতে পারছি না।