হাসিনার পর এবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগ

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। নিজ দলের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি উঠেছে, এবং আজ সোমবার তিনি লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন বলে জানা গেছে।

কানাডার সংবাদমাধ্যম গ্লোব অ্যান্ড মেইল সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এই তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে এখনও কোনো উত্তর দেয়নি।

গ্লোব অ্যান্ড মেইল জানায়, কয়েকটি সূত্রের মতে, ট্রুডো সোমবারের মধ্যে লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন। তবে, তারা এই ব্যাপারে নিশ্চিত নন যে তিনি কখন তার পদত্যাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন, তবে আশা করা হচ্ছে, বুধবারের জাতীয় ককাস বৈঠকের আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন।

এছাড়া, ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি এক অস্থির সময়ে প্রধানের অভাবে রাজনৈতিক মাঠে থাকবে, কারণ চলতি বছরের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলটির পরিস্থিতি সংকটাপন্ন বলে জরিপে দেখা যাচ্ছে।

ট্রুডো ২০১৩ সাল থেকে লিবারেল পার্টির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ২০১৫ সালে তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন। প্রায় ৯ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর, তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে, কানাডার উপপ্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ট্রুডোর সঙ্গে বিরোধের কারণে পদত্যাগ করেন। ফ্রিল্যান্ড একসময় ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তার পদত্যাগের পর থেকেই ট্রুডোর সংকট আরও ঘণীভূত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতেই দলের প্রধান হিসেবে পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।


শেখ হাসিনার ওপর আপনার রাগ হয় না? উত্তরে যা বলেন খালেদা জিয়া

শেখ হাসিনার শাসনামলে নানা ধরনের নির্যাতন ও সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। কারাবন্দি থাকার পর দীর্ঘ সময় তিনি ছিলেন গৃহবন্দি। এমনকি চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়নি।

এসব বিষয়ে সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞাসা করেন, শেখ হাসিনার প্রতি তার কোনো ক্ষোভ বা রাগ আছে কি না। উত্তরে খালেদা জিয়া মৃদু কণ্ঠে বলেন, “রাগ করে কী করবো বলেন! আল্লাহর কাছে বলি।”

সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুল এ স্মৃতিচারণ করেন। তিনি জানান, নভেম্বরে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে কিছুক্ষণ একান্তে কথা হয়।

স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, বেগম জিয়া গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য কামনা করেন। একই সঙ্গে জানান, তিনি সবসময় দেশের খবর রাখেন।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, তিনি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কথা এবং শেখ হাসিনার শাসনামলের দুঃসহ অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানতে চান। লক্ষ্য করেন, খালেদা জিয়া একবারও শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করেননি।

এক পর্যায়ে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন, এত কষ্ট পেয়েও শেখ হাসিনার ওপর রাগ হয় না? উত্তরে বেগম জিয়া কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর ধীরে বলেন, “রাগ করে কী করবো বলেন! আল্লাহর কাছে বলি।”

এ কথা শুনে আসিফ নজরুল অবাক হন। তিনি লিখেছেন, পনেরো বছর ধরে শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর নানা নির্মম নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি শেখ হাসিনার বিষয়ে কোনো তীব্র মন্তব্য করেননি।

আসিফ নজরুল খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বলেন, “আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন এবং গণতন্ত্র ও দেশের অগ্রগতিতে আবার ভূমিকা রাখতে পারেন।”

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন খালেদা জিয়া। বুধবার সকালে তিনি লন্ডনে পৌঁছাবেন এবং সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করবেন।

লন্ডন যাত্রার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রবিবার রাতে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন খালেদা জিয়া। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের তার লন্ডন যাত্রার সময়সূচি জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, চিকিৎসা শেষে তিনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবেন।”