আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত দুই দফায় চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে মারধরের শিকার হয়ে হাসপতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মাহাদি আকিব হোসেন তনয়। জানা গেছে, আকিবের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তার পরিবার-পরিজন। তার সুস্থতার জন্য চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না চিকিৎসকরা।
এদিকে জানা গেছে, বড় হয়ে একজন ‘ডাক্তার’ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আকিব। আর এ জন্য রীতিমতো পরিশ্রমও করতেন তিনি।
কুমিল্লা জিলা স্কুলের ছাত্র মাহাদি আকিব হোসেন তনয়। জিলা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর পরীক্ষা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে। দুটোতেই উত্তীর্ণ হন। তাদের বাড়ি কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কিং বামিশা গ্রামে।
আকিবের মামা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, আকিবরা দুই ভাই। একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছে। আকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজে চান্স পায়। তার বাবা কুমিল্লা জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক গোলাম ফারুক মজুমদার আকিবের সিদ্ধান্তের ওপর সব ছেড়ে দেন। আকিব পরিবারকে জানায়, সে বড় ডাক্তার হবে, তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে না। পরিবার তার দাবি মেনে নিয়ে চমেকে ভর্তি করায়।
তিনি আরও জানান, ও সারাদিন পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মেডিকেলে ভালো করতে হলে আবাসিক হলে থাকতে হবে, তাই হলে ওঠার ব্যবস্থা করা হয়। হলের বাইরে থেকে মেডিকেলে পড়ানো ব্যয়সাপেক্ষ। তার বাবার স্বল্প আয়ে বাইরে রেখে পড়াশোনা করানোও অসম্ভব।
তিনি জানান, আকিব পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সে নিরীহ প্রকৃতির। তার কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। তারপরও দুটি গ্রুপের রাজনৈতিক কোন্দলে বলি হয়েছে সে। আকিবের মা নার্গিস আক্তার গৃহিণী।
দেলোয়ার হোসেন জানান, হল খোলার আগে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে আকিব। গত এক সপ্তাহ পূর্বে হলে ওঠে সে। যাওয়ার আগে মাকে জানায়, আমার যেতে ভালো লাগছে না মা। ওর বাবা বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়। হলে গিয়ে গোলযোগ পরিস্থিতিতে পড়ে সে, কিন্তু ভয়ে তার বাবাকে জানায় না আকিব।
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আকিব হোসেনের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। আর ঐ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আকিবের মাথা ব্যান্ডেজ দিয়ে পেচিয়ে রাখা হয়েছে। আর তাতে লেখা রয়েছে ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’ তার পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে বেশকিছু দিন সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।