সম্প্রতি গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দিঘীর পাড় পূজা মণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় থেমে নেই প্রসশান। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যাচলনা করে গত ২১ অক্টোবর রাতে আটক করা হয় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালসহ বেশ কয়েকজন কে। আর এরই সুবাদে সারাবিশ্ব দেখছে, ধর্মীয় উন্মাদনার কোনও জায়গা বাংলাদেশে নেই।
এদিকে এবার কলকাতার হৃদয় এবং মন জয় করে দেশে ফিরে গেলেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একটি সাক্ষাৎকারে এবং ভাষণে তিনি জানিয়ে গেলেন যে বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মনিরপেক্ষ যে রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তাকে বিনষ্ট করার জন্যেই পাকিস্তানপন্থি কিছু মানুষ দেশে অসন্তোষ সৃষ্টি করে সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি করছে। কিন্তু, বাংলাদেশ সরকার এদের উচিত শিক্ষা দিচ্ছে ও ভবিষ্যতে দেবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার ব্যাপারে তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দায়ী করে বলেন, ১৯৮৮ সালে তাঁর শাসনকালেই রাষ্ট্রধর্ম করা হয়। ড. মাহমুদ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন- ধর্মীয় উন্মাদনার কোনও জায়গা বাংলাদেশে নেই। মৌলবাদের স্থান নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গামণ্ডপ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনটি কারণে এই আক্রমণ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল।
এক নম্বর- মৌলবাদীদের চেষ্টা ছিল ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি করা। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তিতে আন্তর্জাতিক স্তরে কালিমা লেপন এবং তৃতীয়ত, দেশের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকার সম্পর্কে একটা অনাস্থা তৈরি করা। তিনটি কাজেই দুষ্কৃতিরা ব্যর্থ হয়েছে। অসন্তোষ ছড়ানোর মূলে আওয়ামী লীগ এর এক যুবনেতা থাকার রটনাটিকে ড. হাছান মাহমুদ পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে বর্ণনা করে বলেন, বহু বছর আগেই উল্লিখিত ব্যক্তিকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ড. মাহমুদ তাঁর একটি ব্যক্তিগত তথ্যও ভাগ করে নেন সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ি চট্টগ্রামের দেওয়ানজি পুকুরপাড়ে। এখানে ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হয়। এখানকার পুজো পুরস্কৃত হলে আমার স্ত্রী আনন্দিত হন। এটাই কি প্রমাণ করে না বাংলাদেশে ধর্মান্ধতার কোনও জায়গা নেই। স্বল্প অবস্থানেই বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী কলকাতকে জয় করেছেন। তার থেকেও বড় কথা, সুললিত ভাষণে বাংলাদেশের বার্তা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
সাংবিধানিক ভাবে বাংলাদেশে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। এখানে স্বাধীন ভাবে সবাই যার যার ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে। আর তাই এই দিক রীতিমতো নজরে রাখছেন প্রশাসন। ধর্ম অবমাননা কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন এ সরকার।