প্রতিবছরেই বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য দক্ষ ও আধা-দক্ষ শ্রমিক বিশ্বের বিভভিন্ন দেশে বৈধ-অবৈধ পন্থায় পাড়ি জমিয়ে থাকে। তবে অবৈধ ভাবে পাড়ি জমানো শ্রমিকরা নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। এমনকি বেতন বৈষম্যের শিকারও হয়ে থাকে। বেতন বৈষম্যের তালিকায় বৈধ শ্রমিকরাও রয়েছে। তবে সম্প্রতি এই বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে বিশেষ প্রস্তাব রাখলো বাংলদেশ।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা-দক্ষদের বৈধভাবে ইউরোপে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ব্রাসেলসে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চতুর্থ কূটনৈতিক পরামর্শ (Consultations) সভায় ঢাকার পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভিসা কোডের ধারা-২৫ এর অধীনে ইউরোপে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বাস্তবায়নে বাংলাদেশে যে অগ্রগতি হয়েছে সেটা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ইইউ। একইসঙ্গে ইউরোপে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিদের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে সেটার বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক পরামর্শ সভায় ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে ইইউয়ের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইগ্যান্ড গুনার।
সভায় বাণিজ্য, অভিবাসন, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা ইস্যু, জলবায়ু, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয় ঢাকা-ইইউ। বৈঠকে ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতার নতুন কৌশল উপস্থাপন করেছে। উভয়পক্ষ মিয়ানমার ও আফগানিস্তানসহ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি, সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং জাতিসংঘের ফোরামে সন্ত্রাস দমন ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে ইইউয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়। ইইউ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, এ আইনের কিছু বিধানে ডিজিটাল অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিবৃত উদ্দেশ্যের বাইরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এবং এই প্রসঙ্গে কিছু চলমান বিচারের বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে ইইউ। বাংলাদেশ এ বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। উভয়পক্ষ কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধারে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং সাম্প্রতিক স/হিং/স/তা ও বৈষম্যের নিন্দা জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা অব্যাহত রাখার জন্য ইইউ বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের উদার ভূমিকার প্রশংসা করে। উভয়পক্ষই মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় এবং ভাসানচর সংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে স্বাগত জানায়।
বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রবাসীদের থেকে বিপুল পরিমণের অর্থ উপার্জন করে থাকে। দেশের অর্থনীতিতে এই অর্থ আগ্রনী ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানে নিরলস ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে গ্রহন করেছে নানা ধরনের পদক্ষেপ।