ভারতের হিন্দি সিনেমার মেঘা সুপারস্টর শাহরুখ খান। তিনি ৩ দশকের বেশি সময় ধরে বলিউড ইন্ডাষ্টিতে কাজ করেছেন। তিনি অভিনয় জগতের ক্যারিয়ারে অর্জন করেছেন ব্যপক সফলতা এবং সম্মাননা। এমনকি তিনি বর্তমান সময়ে তার কাজের মধ্যে দিয়ে সফলতার শীর্ষে রয়েছেন। বিশ্ব জুড়েই রয়েছে তার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা। এই অভিনেতার ছেড়ে দেওয়া সিনেমায় অভিনয় করে অনেক অভিনেতাই সফলতার শীর্ষ স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এলো এই অভিনেতার ছেড়া দেওয়া বেশ কয়েকটি সিনেমার নাম এবং ঐ সিনেমাগুলোতে অভিনয় করে সফলতা পাওয়া অভিনেতাদের নাম।
কখনও শিডিউল না মেলায়, কখনও বা গল্প ও চরিত্র পছন্দ না হওয়া। প্রায় তিন দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এসব অনেক কারণে একাধিক ছবি ছেড়ে দিয়েছেন শাহরুখ। সেসব ছবি করে অন্য অভিনেতারা প্রচুর সাফল্য পেয়েছেন। বক্স অফিস বাজিমাত করেছেন।
এ নিয়ে কিং খানের অবশ্য আফসোস নেই। সেই কবেই তো বলেছেন- ‘হার কর জিতনেওয়ালে কো বাজিগর কহতে হ্যায়।’
দেখে নেয়া যাক শাহরুখের ছেড়ে দেওয়া সিনেমাগুলোর তালিকা ও অন্য অভিনেতাদের সাফল্য-
এক থা টাইগার: সালমান খান নয়, ‘টাইগার’ হিসেবে পরিচালক কবীর খানের প্রথম পছন্দ ছিলেন শাহরুখ। চিত্রনাট্য পছন্দ হলেও ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কিং খান। কারণ তখন যশ চোপড়ার ‘জাব তাক হ্যায় জান’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। পরিবর্তে আসেন সালমান। বক্স অফিসে তিনশো কোটিরও বেশি ব্যবসা করেছিল এই ছবি। আর শাহরুখের ‘জাব তাক হ্যায় জান’ তেমন সফল ছিল না।
থ্রি ইডিয়টস: ২০০৯ সালে বলিউডের অন্যতম সফল ছবি এটি। আমির খান অভিনীত চরিত্রটির জন্য শাহরুখকে চেয়েছিলেন পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া। কিন্তু সময়ের অভাবে পরিচালককে ফিরিয়ে দেন ‘বাদশাহ’। শাহরুখের প্রত্যাখ্যানেই সে বছর ছবি চলে যায় আমিরের হাতে। বক্স অফিসে ছবিটি আগের প্রায় সব সাফল্যের রেকর্ড চুরমার করে দেয়।
মুন্নাভাই এম বি বি এস: পরপর ফ্লপ ছবি দিয়ে ডুবে যেতে বসা সঞ্জয় দত্তের ক্যারিয়ার চাঙ্গা হয়েছিলো ‘মুন্নাভাই’ সিরিজ দিয়ে। এ সিরিজের প্রথম ছবিটি বক্স অফিসে ঝড় তোলে। সঞ্জয়ও সাফল্যের দেখা পান দীর্ঘ কাল পর। অথচ আসলে তার জন্য রাখা হয়েছিল জিমি শেরগিল অভিনীত চরিত্রটি। ‘মুন্নাভাই’ হিসেবে নির্মাতারা চেয়েছিলেন শাহরুখকে। তিনি রাজি না হওয়ায় সঞ্জয়ের ঝুলিতে গিয়ে পড়ে মুন্নাভাই হওয়ার দায়িত্ব।
লগান: আমিরের ছবির দীর্ঘ তালিকায় এখনও ঝলমল করে ‘লগান’। শাহরুখ ছবিটি না করাতেই আশুতোষ গোয়ারিকরের ‘ভুবন’ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন বলিউডের ‘পারফেকশনিস্ট’। প্রথমে এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু বন্ধু আশুতোষকে ফিরিয়ে দেন অভিনেতা। আমির খানকে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন পরিচালককে। তখনও দুই খানের বন্ধুত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ পড়েনি। শাহরুখের ছেড়ে দেওয়া চরিত্রে তাই ঢুকে পড়েন আমির। আমির খান এই ছবি দিয়ে দুনিয়া মাতিয়েছিলেন।
কাহো না প্যায়ার হ্যায়: শাহরুখ এই ছবির প্রস্তাব না ফেরালে কী হতো ভেবে দেখেছেন? বলিউড কি পেত সুঠাম চেহারার, নাচে পারদর্শী নতুন নায়ককে? শাহরুখকে চিত্রনাট্য পড়ে শুনিয়েছিলেন রাকেশ। শেষমেশ তা মনে ধরেনি কিং খানের। অগত্যা ছেলে হৃতিক রোশনকে নায়ক করেই ছবি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন রাকেশ। হৃতিকের প্রথম ছবি শুধু বক্স অফিসেই ঝড় তোলেনি। বুঝিয়ে দিয়েছিল তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া।
যোধা আকবর: ‘স্বদেশ’-এর পর এই ছবিতেও শাহরুখকেই মুখ্য চরিত্রে চেয়েছিলেন আশুতোষ গোয়ারিকর। তখন অন্য একটি ছবির কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলিউড বাদশা। তার পরেই ছিল সপরিবার দীর্ঘ ছুটির পরিকল্পনা। তাই শেষমেশ আর পর্দার আকবর হতে পারেননি শাহরুখ। পরিবর্তে হৃতিককে ছবিতে নেন পরিচালক।
রং দে বসন্তি: রাকেশ ওম প্রকাশ মোহরা পরিচালিত এই ছবিতেও অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল শাহরুখের। শোনা যায়, মাধবন অভিনীত চরিত্রটির জন্য তাকে চেয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু সময়ের অভাবে এই ছবিতে কাজ করা হয়নি কিং খানের।
ফেরারি কি সওয়ারি: একাধিকবার প্রত্যাখ্যাত হয়েও এ ছবিতে মুখ্য চরিত্রের জন্য শাহরুখকে চেয়েছিলেন বিধু বিনোদ চোপড়া। কিন্তু ফের শাহরুখ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাকে।
গতকাল এই জনপ্রিয় অভিনেতার জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে। এই জন্মদিনকে ঘিরে ভক্ত-অনুরাগী এবং শুভাকাঙ্খীদের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন শাহরুখ খান। এমনকি বলিউডের অনেকেই তাকে উদ্দেশ্যে করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের পোষ্টও প্রদান করেছেন।