Wednesday , October 16 2024
Breaking News
Home / Crime / লোন নিয়ে সর্বশ্য হারালেন হালিমা: সাত মাসে ৪ হাজার টাকার সুদ বেড়ে দেড় লাখ

লোন নিয়ে সর্বশ্য হারালেন হালিমা: সাত মাসে ৪ হাজার টাকার সুদ বেড়ে দেড় লাখ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ফুলপাড় গ্রামের গৃহবধূ হালিমা বেগম। করোনাকালীন সংকটে তিনি স্থানীয় দারিদ্র্য বিমোচন বহুমুখী সমবায় সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। শুরুতে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। তিনি ৪৪টি কিস্তিতে প্রতি কিস্তিতে ১০৫০ টাকা করে ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। তবে শেষ ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সমস্যার শুরু। মাত্র সাত মাসের মধ্যে সেই ৪ হাজার টাকার সুদ বেড়ে দাঁড়ায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকায়!

পরিশোধ করতে না পারায় এক মাসের মাথায় দেলোয়ার হোসেন, যিনি ওই এনজিওর মালিক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ভাই, হালিমার স্বামীকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান। পরবর্তীতে দেলোয়ার তাদের বসতবাড়ি লিখে নেন। কিছুদিন পর সেই জমি অন্যত্র বিক্রি করে দেন। ফলস্বরূপ, হালিমা ও তার পরিবার এখন অন্যের ভাড়া বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ঘটনার মধ্যেই আরও ভয়াবহ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, দেলোয়ার এভাবে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারকে ঋণের ফাঁদে ফেলে জমি লিখে নিয়েছেন। ঋণ দেয়ার পর সুদের হার ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে তিনি সাধারণ মানুষদের সর্বস্বান্ত করছেন। এরই মধ্যে ১০ জন ভুক্তভোগী দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন।

মামলাকারীদের মধ্যে আছেন মুকসুদপুরের ডাঙ্গাদুর্গাপুর গ্রামের মিলু মোল্যার স্ত্রী জাহানারা বেগম, লিয়াকত গাজীর স্ত্রী সাহিনা বেগম, রবিউল শেখের স্ত্রী হালিমা বেগম, নুরু মোল্যার স্ত্রী আসমা বেগম, ফুলারপাড় গ্রামের লিটন মুন্সির স্ত্রী রিপা বেগম, একই গ্রামের লিয়াকতের ছেলে তুহিন, সালিনাবক্সা গ্রামের মামুন শেখের স্ত্রী কাকলি বেগম, দেলোয়ার সরদারের স্ত্রী বিউটি বেগম এবং ডাকপাড় গ্রামের হাজী মো. রুস্তুম শেখের ছেলে ফরিদুল ইসলাম।

এক ভুক্তভোগী লিটন মুন্সি জানান, তিনি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ৩৯টি কিস্তি পরিশোধ করার পর বাকি ছিল ৭টি কিস্তি। কিন্তু করোনার কারণে সে সময় কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় দেলোয়ার সুদের টাকা বাড়িয়ে দেন। প্রথমে সুদ দাঁড়ায় ৩ লাখ টাকায়, এরপর তা বেড়ে হয় ৬ লাখ টাকা। তিনি যখন এ টাকা পরিশোধ করতে পারেননি, তখন দেলোয়ার তাকে বন্দি করে জমি লিখে নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান জানান, বিষয়টি আগে জানা ছিল না। মামলায় হত্যার হুমকির বিষয়টি উল্লেখ থাকায় থানা পুলিশকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এনজিও কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদন্ত করে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতায় শীঘ্রই ভুক্তভোগীরা তাদের জমি ফিরে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

About Nasimul Islam

Check Also

দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া সেই ‘ওসি হেলাল’ সম্পর্কে যা বললেন রনি

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন কলের মাধ্যমে ‘ওসি হেলাল’ পরিচয়ে দেখে নেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *