প্রথম শিকার ১৯৮২ সালে। ওই বছরে এক মহিলাকে বিয়ে করেন তিনি। দ্বিতীয় বিয়ে করেন ২০০২ সালে। এরপর আইনজীবী থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, সেনাবাহিনীতে কর্মরত নারী, এমনকি বেশ কয়েক জন উচ্চশিক্ষিত নারীকেও বিয়ে করেছেন তিনি। ভারতের দিল্লি, পাঞ্জাব, আসাম, ঝাড়খণ্ড এবং উড়িষ্যাসহ সাত রাজ্যে ১৪ জনকে বিয়ে করে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ৬০ বছর বয়সী বিয়েপাগল। গতকাল সোমবার তাকে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি উড়িষ্যার কেন্দ্রাপড়ার পাতকুড়া থানার বাসিন্দা।
বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েরবসাইটগুলিতে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে নারীদের সঙ্গে আলাপ শুরু করতেন। শিকার হিসেবে বেছে নিতেন মূলত মাঝবয়সি অবিবাহিত মহিলা, ডিভোর্সিদের। এ ভাবে একে একে তার শিকারের ফাঁদে ফেলেন চিকিৎসক, আধাসেনায় কর্মরত নারী, আইনজীবী এমনকি উচ্চশিক্ষিত নারীরাও। ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ঊমাশঙ্কর দাশ জানিয়েছেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর মোট পাঁচ সন্তান। ২০০২ থেকে ২০২০-র মধ্যে বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করার পর বিয়ে করতেন। এবং ঘটনাচক্রে, যত জনকে তিনি বিয়ে করছেন, কেউই তার আগের বিয়ে সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বিয়ে করাই অভিযুক্তের মূল উদ্দেশ্য ছিল না। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল চাকরিজীবী নারীদের বিয়ে করে তাঁদের টাকাপয়সা আত্মসাৎ করা। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি বিয়ের পর স্ত্রীদের টাকা হাতিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাইয়ে এক শিক্ষিকা ভুবনেশ্বরে অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগ ছিল, এক ব্যক্তি তাকে ২০১৮-য় দিল্লিতে বিয়ে করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে আসেন। ওই ব্যক্তি বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন এমনও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। শিক্ষিকার অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। সোমবারই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করেছে তারা।
অভিযুক্তের কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এসময় সাংবাদিকদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আরও জানান, অভিযুক্ত ব্যাক্তির নামে প্রতারণার অভিযোগ শুধু নারীকেন্দ্রিকই নয়। আরও প্রতারণা কাজে জড়িত ছিলেন তিনি। যুবকদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ঘুষ হিসেবে টাকা নেওয়ার অভিযোগে এর আগে হায়দরাবাদেও গ্রেপ্তার হন তিনি।