Friday , December 13 2024
Breaking News
Home / Countrywide / বিদ্যালয়ে আসছেন না শিক্ষক কোলে নিয়ে ক্লাস করানো সন্তানের মা

বিদ্যালয়ে আসছেন না শিক্ষক কোলে নিয়ে ক্লাস করানো সন্তানের মা

শিক্ষকের ক্লাস নেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় ৪৫ মিনিট ছিল। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, পঙ্কজ মধু নামের একজন শিক্ষক ক্লাসের এক ছাত্রীর তিন মাস বয়সী সন্তানকে প্রায় ২৫ মিনিট সময় ধরে নিজের কোলে নিয়ে পড়িয়েছেন। এই ধরনের ঘটনাকে স্মৃতি হিসেবে রেখে দেওয়ার জন্য ঐ সন্তানের মা তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দৃশ্যটি রেকর্ড করে।

সন্তানকে কোলে নিয়ে শিক্ষকের এই ধরনের ক্লাস নেওয়ার ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট হতেই সেটা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে শুরু করে। এরপর ঐ ছবির বিষয় নিয়ে খবরের পাতায় প্রকাশিত হয়, তখন এটি আরও আলোচনার খোরাক হয়ে ওঠে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক পঙ্কজ মধু এখন প্রশংসায় ভাসছেন। ফে’সবুকের পাশাপাশি সামাজিকভাবেও আলোচনা হচ্ছে ওই শিক্ষকের বিষয়ে। এ ঘটনায় শিক্ষকের মানবিক গুণাবলীর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর দরদের বিষয়টিও ফুটে উঠেছে বলা হচ্ছে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, ‘শিক্ষক নিঃস’ন্দেহে প্রশংসার কাজ করেছেন। ওই শিক্ষার্থী যেন ঝরে না পড়েন সে কারণে তিনি এ কাজটি করেছেন। তিনি নিজেই তাকে স্কুলে আসতে উৎসাহ দিয়েছেন।’ তবে একই সঙ্গে স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে হওয়ায় সংশ্লিষ্টদেরকে দা’/য়ী করেন তিনি।

খেলাঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি ডা. মো. আবু সাঈদও শিক্ষকের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক মানবিক কাজটি করেছেন। তবে ওই স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ের বিষয়টি মোটেও ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আগে থেকে জেনে পদক্ষে’প নেওয়া যেত।’

এদিকে ওই শিক্ষার্থী সোমবার বিদ্যালয়ে যায়নি। বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের আলোচনার প্রেক্ষিতে সে স্কুলে আসেনি বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীলরা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন।

শিক্ষক পঙ্কজ মধু বলেন, ‘নানা রকমের আলোচনার কারণে ওই শিক্ষার্থী স্কুলে আসেনি বলে জানতে পেরেছি। তবে আবারও সে স্কুলে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমিও তাকে স্কুলে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবো। মেয়েটি ঝরে না পড়লে সেটি হবে সফলতা।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি ভা’ইরাল হওয়ার কথা কখনও ভাবিনি। ঐ ছাত্রী সেই সময়ে লিখতে না পারার কারনে তার সন্তানকে কোলে নিয়ে নি। ঐ ছাত্রী ছবিটি তুলেছিল এই বলে যে সে এই পরিস্থিতিটি স্মৃতি হিসেবে রেখে দিবে।”

প্রসঙ্গত, গত রবিবার, চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একজন ছাত্রী তার সন্তানকে কোলে করে নিয়ে ক্লাস করতে আসে। শিক্ষক পঙ্কজ মধু, যিনি হোয়াইট বোর্ডে লিখছিলেন, তিনি লক্ষ্য করলেন যে তার ঐ ছাত্রী তার সন্তানকে কোলে নিয়ে লিখতে পারছে না সেই সময় তিনি তার তিন মাস বয়সী কন্যা সন্তনকে নিজের কোলে তুলে নিয়ে তাকে লেখার সুযোগ করে দেন। যেটা একটি মহনুভবতার পরিচয় বহন করে।

 

About

Check Also

মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি, উত্তেজনা পশ্চিমবঙ্গে

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ‍্যালঘু সেলের মালদা জেলা সভাপতি টিঙ্কু রহমান বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এক বিতর্কিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *