সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অধিবেশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা উপস্থিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনাও উপস্তিত ছিলেন ঐ অধিবেশন। ঐ অধিবেশনের সফর কালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিশেষ প্রস্তাব দিয়েছেন আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদান। দেশটি জানিয়েছে বাংলাদেশ চাইলেই সেই দেশের কৃষি জমি ব্যবহার করতে পারবে।
জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশকে কৃষি জমি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে মধ্য আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানের প্রতিনিধি দল। তারা চায়, বাংলাদেশ সেই জমি ব্যবহার করে কৃষিপণ্য উৎপাদন করুক। এ বিষয়টি আরও গভীরভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও কৃষি- এই তিন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ বৈঠকে যোগ দেন।
র/ক্ত/ক্ষ/য়ী গৃহ/যু/দ্ধে ১৫ লাখের ওপর মানুষের প্রা/ণ/হা/নি/র পর ২০১১ সালে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে পরিচিতি পায় দক্ষিণ সুদান। ওই বছরের ৯ জুলাই জাতিসংঘ স্বীকৃত ১৯৩তম দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে দেশটি। ৬ লাখ ১৯ হাজার ৭৪৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশটিতে ১ কোটি ১০ লাখের কিছু বেশি। বৈঠকে বিষয়টি দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দক্ষিণ সুদানের প্রতিনিধিরা বলেছেন, তাদের দেশে অনেক জমি পতিত পড়ে আছে। বাংলাদেশ চাইলে এই জমি ব্যবহার করতে পারে কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য। বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করলে তারা জমি দেবে। সেজন্য পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও কৃষি তিন মন্ত্রণালয়কে একত্রে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- দেশটিতে কৃষিপণ্য উৎপাদন করলে সেখানকার স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যাবে, বাইরের অন্যান্য দেশে রফতানি করা যাবে, আবার প্রয়োজনে দেশেও আনা যাবে। কৃষি পণ্যের মধ্যে সবজি উৎপাদন করলে দক্ষিণ সুদান সেসব কেনারও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের বড় অংশই তৈরি পোশাক। এর বাইরে এই পদক্ষেপ (দক্ষিণ সুদানে কৃষি পণ্য উৎপাদন) নিলে রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণে বড় ভূমিকা রাখা যাবে, এমনটা প্রধানমন্ত্রী মনে করেন বলেও জানিয়েছেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এর আগে গেল আগস্ট মাসে দেশটিতে সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ২২ আগস্ট দেশটির রাজধানী জুবায় দেশটির প্রেসিডেন্ট সালভা কির মায়ারদিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দক্ষিণ সুদানের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দক্ষিণ সুদানের উন্নয়নে কাজে লাগানোর প্রস্তাব দেন।
অবশ্যে দক্ষিণ সুদানের দেওয়া প্রস্তাব বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি সরকার। তবে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও কৃষি তিন মন্ত্রণালয়কে একত্রে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অবশ্যে এই বিষয়ে যৌথ ভাবে কাজ করলে দুই দেশই লাভবান হবে।