বাইরে থেকে দেখে মনে হতো সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য তাঁরা৷ চলনবলন, পোশাকআশাক থেকে এরকম মনে হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক৷ কিন্তু দিনের আলো শেষে রাতে( night )র অন্ধকার নামতেই পাল্টে যেতেন তাঁরা৷ রাজার হালে জীবনযাপন করা পরিবারের মূল পুরুষ সদস্যরা একসাথে মিলে করতেন চুরি৷ তাও যেনতেন চুরি নয়৷ গরু-ছাগলের মত মূল্যবান প্রাণীজ সম্পদের চৌর্যবৃত্তি করতেন তাঁরা৷
এমন ঘটনাই ঘটেছে নওগাঁ( Naogaon ) জেলায়। জানা যায়, জাকির হোসেন (৫০) রাজকীয়ভাবে চলাফেরা করতেন। দিন শেষে রাত হলেই দলবল( Team ) নিয়ে চুরি করতেন জাকির হোসেন, তাঁর ছেলে, বেয়াই ও নাতজামাই। প্রবাদ আছে চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন। ঠিক তাদের কপালে তাই হলো। নিয়মিত এলাকায় চুরি করতো। নওগাঁ( Naogaon )র বদলগাছি( Badalgachi ) উপজেলার তেঁতুলিয়া( Tentulia ) গ্রামে এক সাথে বসবাস করতোরা।
চোর চক্রের সদস্যদের মধ্যে জাকির হোসেন, তাঁর ছেলে আবদুস সবুর( Abdus Sabur ) (২৫), বেয়াই রুহুল আমিন( Ruhul Amin ) (৪৩) ও নাতজামাই তানজিদ আহাম্মেদ( Tanjid Ahmed ) (২০)।
জাকির হোসেনের( Hossain )( Zakir Hossain ) পাকা বাড়ি। পাশাপাশি রয়েছে তাঁর স্বজনদের আরও তিনটি আধা পাকা পাকা বাড়ি। এসব বাড়ির প্রতিটিতে রয়েছে গরু রাখার গোয়ালঘর। পুলিশের( police ) চোরাই গরু উদ্ধার অভিযানে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গরু চুরি করে এনে এসব গোয়ালঘরে বেঁধে রাখা হতো।
নিবার নওগাঁ( Naogaon )র বদলগাছি( Badalgachi ) থানা-পুলিশ ও জয়পুরহাটের( Joypurhat ) আক্কেলপুর থানা-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জাকির হোসেনের( Hossain )( Zakir Hossain ) চারটি বাড়ির গোয়ালঘর থেকে চোরাই ওই ১২টি গরু ও একটি ছাগল উদ্ধার করেছে। সকাল( morning ) ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত দুই থানা-পুলিশের( police ) এই যৌথ অভিযান চলে। এ সময় জব্দ করা হয়েছে গরু-ছাগল চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি। গ্রেপ্তার করা হয়েছে গরুচোর চক্রের ওই সদস্যদের। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস ধরে নওগাঁ( Naogaon )র বদলগাছি( Badalgachi ) ও জয়পুরহাটের( Joypurhat ) আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাতে( night ) সিঁধ কেটে ও বিভিন্ন কৌশলে চোরেরা বাড়িতে ঢুকে গরু-ছাগল চুরি করছিলেন। প্রায় ২৫ দিন আগে রাতে( night ) বদলগাছি( Badalgachi ) উপজেলার হলুদবিহার( Haludbihar ) গ্রামের গোলাম মোস্তফার দুটি গরু চুরি হয়। আজ সকাল( morning )ে( morning ) জাকির হোসেন তাঁর বাড়ির অদূরে ঝাপড়িতলার মোড়ে( corner Jhapritala ) কয়েকটি গরু বিক্রির জন্য ভটভটিতে তুলছিলেন।
এ সময় গোলাম মোস্তফার এক আত্মীয় ভটভটিতে থাকা একটি গরু গোলাম মোস্তফার বলে চিনতে পারেন। তখন তিনি গোলাম মোস্তফাকে( Golam Mostafa ) খবর দেন। গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলে এসে গরুটি শনাক্ত করেন। তখন জাকির হোসেন ও তাঁর ছেলে গরুটি তাঁদের কেনা বলে দাবি করেন। মুহূর্তেই সেখানে লোকজন জড়ো হন। পরে স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি বদলগাছি( Badalgachi ) থানা-পুলিশকে জানান।
এরপর বদলগাছি( Badalgachi ) ও আক্কেলপুর থানা-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে জাকির হোসেনের( Hossain )( Zakir Hossain ) চারটি বাড়ি থেকে ১২ চোরাই গরু ও একটি ছাগল উদ্ধার করে। নওগাঁ( Naogaon )র বদলগাছি( Badalgachi ) উপজেলার তেঁতুলিয়া( Tentulia ) গ্রামের এই বাড়িটি থেকেই শনিবার( Saturday ) পুলিশ ১২টি গরু ও একটি ছাগল উদ্ধার করেছে।
এ সময় জাকির হোসেন, তাঁর ছেলে, বেয়াই ও নাতজামাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে গরু চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি জব্দ করে পুলিশ।( police. ) বেলা দুইটায় চোরাই গরু-ছাগল ও সরঞ্জামাদিসহ তাঁদের বদলগাছি( Badalgachi ) থানায় নেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় গরু চুরি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
স্থানীয় কোলা( Cola ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম স্বপন( Shahinur Islam Swapan ) বলেন, জাকির হোসেন ও পরিবারের সদস্যরা রাজকীয়ভাবে চলাফেরা করতেন। জাকির হোসেন পেশায় একজন গরুচোর। পরিবারে অন্য সদস্যরাও গরু চুরির কাজে যুক্ত ছিলেন। জাকিরের( Zakir ) বাড়ি থেকে চোরাই গরু-ছাগল উদ্ধার করেছে পুলিশ।( police. )
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান( Saidur Rahman ) ও বদলগাছি( Badalgachi ) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম( Atiqul Islam ) বলেন, গরুচোর চক্রের সদস্য জাকির হোসেন, তাঁর ছেলে, বেয়াই ও নাতজামাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গরু চুরি ও অস্ত্র আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আরও চোরাই গরু উদ্ধারে অভিযান চলছে।
মানুষের সম্পদ চুরি করে সম্পদের পাহাড় গড়েও শেষপর্যন্ত শেষ রক্ষা হলো না এই চোর পরিবারের৷ নিজেদের মুখোশ উন্মোচনের পাশাপাশি আইনের আওতায় আসায় হয়তো এক দীর্ঘ কারাবরণও অপেক্ষা করছে তাদের ভাগ্যে৷