Sunday , September 8 2024
Breaking News
Home / Entertainment / জসিমের অভিনয় জীবনের শুরুর গল্প বললেন চুন্নু

জসিমের অভিনয় জীবনের শুরুর গল্প বললেন চুন্নু

বাংলা চলচ্চচিত্র অঙ্গনের বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় অভিনেতা জসিম। তরা পূর্ন নাম আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন। তবে তিনি জসিম নামেই পরিচিত। তিনি মূলত বাংলা চলচ্চিত্রে অ্যাকশন চরিত্রে অভিনয় করতে। সম্প্রতি ফাইট ডিরেক্টর আতিকুর রহমান চুন্নু জসিমের অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে অানেক অজানা কথা জানালেন।

পুরান ঢাকায় এক কুস্তি প্রতিযোগিতায় অতিথি হয়ে গেছেন চিত্রনায়ক আজিম। সেই আসরেই কুস্তি লড়তে এসেছিলেন জসিম ও তাঁর কয়েক বন্ধু। শারীরিক গড়ন দেখে তাঁদের অভিনয়ে আসতে বলেন এই চিত্রনায়ক। সেই থেকেই জসিমের সঙ্গে আজিমের সখ্য। জসিম আর তাঁর বন্ধুদের সিনেমায় সুযোগ দিতে পরিচিত প্রযোজক ও নির্মাতাদের বলে দেন আজিম। একদিন সুযোগও পেয়ে যান জসিম। দৃশ্যটি ছিল খুবই ছোট, সিনেমার নায়িকা শাবানাকে কাঁধে তুলে পালাতে হবে। ব্যস এটুকুই। প্রথম অভিনয়, পারবেন কি না, এই নিয়ে মনে ভয় ছিল। চার দিন অপেক্ষার পর ঠিকঠাক মতোই দৃশ্যটি করেন তিনি। জসিমের অভিনয়জীবনের শুরুর এই গল্প ফাইট ডিরেক্টর আতিকুর রহমান চুন্নুর কাছে শোনা। জসিমের গড়া ফাইটিং দল জ্যাম্বস গ্রুপের তিনি সদস্য। জসিমের সঙ্গে অনেক সিনেমাতেই তিনি ফাইটার হিসেবে কাজ করেছেন।

জ্যাম্বস গ্রুপ সম্পর্কে চুন্নু বলেন, ‘বস (জসিম) আমাদের ফাইটিং শেখাতেন। তাঁর কাছেই কাজের হাতেখড়ি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমাদের সঙ্গে গল্প করতেন। সেভাবেই শোনা, মুক্তিযুদ্ধের সময় ট্রেনিংয়ে কলকাতায় যান তিনি। এ সময় থাইল্যান্ডের একজন তাঁকে মার্শাল আর্ট ও আরও কিছু ফাইটিংয়ের কৌশল শেখান। এসবের চর্চা তিনি যু/দ্ধে/র পরও চালিয়ে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বস নায়ক আজিমের সুপারিশে “রংবাজ” সিনেমায় ফাইট ডিরেক্টরের কাজ পান।’ রংবাজ সিনেমার শুটিংয়ে গিয়ে তিনি মা/র/পি/টের দৃশ্যগুলো নিজের মতো করে দেখিয়ে দেন। এই সময় তিনি দেখিয়ে দেন কীভাবে শব্দ করে মারলে, কীভাবে মাটিতে পড়লে বাস্তবসম্মত হবে। নির্মাতা তাঁর কৌশল ও অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন। এর আগপর্যন্ত বাংলা চলচ্চিত্রে মার/পি/টে/র দৃশ্য বলতে ছিল লাঠালাঠি, দৌড়াদৌড়ি, পাছড়াপাছড়ি আর কুস্তি।

১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় রংবাজ। আরও অনেক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি মা/র/পি/ট দৃশ্যের নতুনত্বের জন্য সারা দেশের দর্শকদের মধ্যে সিনেমাটি বিপুল আগ্রহ তৈরি করে। এই সিনেমা থেকেই বাংলা ছবির মা/র/পি/টে ‘টিসুম টিসুম’ জাতীয় শব্দ যুক্ত হয়। প্রশিক্ষক, ফাইটার ও খল অভিনেতা হিসেবে দ্রুত প্রতিষ্ঠা লাভ করেন জসিম। অনেকেই তাঁর কাছে ফাইটিং শিখতে ধরনা দিতে থাকেন। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ফাইটার তৈরি করার জন্য তিন বন্ধু এনামুল করিম আমান, মাহবুব খান গুই, রুহুল আমিন বাবুল মিলে ১৯৭৭ সালের দিকে গড়ে তোলেন পেশাদার ফাইটিং গ্রুপ। এটাই বাংলাদেশের প্রথম ফাইটিং দল। সবার নামের আদ্যাক্ষরের সঙ্গে বহুবচনবাচক ‘এস’ যোগ করে দলের নাম রাখা হয় ‘জ্যাম্বস’ (JAMBS) ফাইটিং গ্রুপ। সিনেমার টাইটেলে তখন লেখা থাকত ফাইট জ্যাম্বস গ্রুপ।

দোস্ত দুশমন, হুর এ আরব, আল হেলাল, বদলা, একমুঠো ভাত, লুটেরাসহ অনেক সিনেমায় ফাইট ডিরেক্টর ছিল জ্যাম্বস। বাংলা চলচ্চিত্রের দক্ষ ফাইটার তৈরিতেও এই জ্যাম্বস গ্রুপ অবদান রাখে। জ্যাম্বস গ্রুপ এখন আর নেই। মা/রা গেছেন জসিম ও মাহবুব খান। অন্য দুজন জীবিত থাকলেও মা/র/পি/ট নির্দেশনা আর দেন না। ফাইট ডিরেক্টর ও ফাইটারদের মধ্যে আরমান, মোসলেম ও কামাল, আমির, বুলেট, নূর ইসলাম, আওলাদ, পারভেজ গাঙ্গুয়াসহ অনেকেই জসিমের ছাত্র। খল অভিনেতা পারভেজ গাঙ্গুয়া বলেন, ‘আমি সরাসরি জসিম ভাইয়ের হাত ধরে ফাইটিং শিখেছি। আমাদের দেশে ফাইটিংয়ে এখনো বসের (জসিম) ওপরে আর কেউ নেই। এখন ফাইটারদের কাজ কম। কিন্তু জসিম ওস্তাদের সঙ্গে যখন থেকেছি, তখন আমাদের জ্যাম্বস গ্রুপের প্রত্যেক সদস্যের মাসের পর মাস শিডিউল আগেই বুকিং হয়ে যেত।’ নব্বইয়ের দশকে জসিমের ছাত্র ছিলেন ২০০ জনের বেশি। তাঁরা এখন নিয়মিত সিনেমার ফাইট দলে কাজ করেন। জসিম জীবিত থাকতেই তাঁর ছাত্রদের জন্য ‘জুনিয়র জ্যাম্বস’ নামে একটি ফাইটিং দল গঠন করে দিয়েছিলেন। এই দলের সদস্যরাই অভিনেতার জন্ম ও মৃ/ত্যু/বার্ষিকীতে গুরুকে নিয়মিত স্মরণ করেন।

জসিম তার ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সিনেমা গুলো দর্শক মাঝে বেশ প্রসংশিত হয়েছে এবং ব্যবসা সফল হয়েছে। ‘দেবর’ এই জনপ্রিয় অভিনেতার প্রথম সিনেমা। এই জনপ্রিয় অভিনেতা ১৯৯৮ সালের ৮ই অক্টোবর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরলোকগমন করেন।

About

Check Also

দেহ ব্যবসার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হওয়ার পর মুখ খুললেন সোহানা সাবা

সোহানা সাবা বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন। গণমাধ্যমে ‘সোহানা সাবার দেহ ব্যবসার চাঞ্চল্যকর তথ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *