তেষট্টি বছর বয়সী বৃদ্ধ মাহমুদ আলী পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রী। বসবাস সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমার তেতলী ইউনিয়নে। হঠাৎই কাঠের কাজের পেশা ছেড়ে নিজেকে করে ফেললেন আমূল পরিবর্তিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডিবি, সিআইডি, দুদকের বড় কর্মকর্তা প্রভৃতি নানাবিধ পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করে তুলতেন অন্যদের কাছে৷ পাশপাশি দাবি করতেন, সব সমস্যার সমাধান তাঁকে দিয়ে সম্ভব৷ অনেক ‘মুশকিল আসান’ এর মতো। আর এভাবেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন প্রতারণা।
তবে এত ‘বহুমুখী প্রতিভা’ এর অধিকারী হয়েও শেষ পর্যন্ত শেষরক্ষা হলো না মাহমুদ আলীর। অবশেষে র্যাবের জালে আটকা পড়েছেন তিনি।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার র্যাব-৯ এর মুখপাত্র আফসান আল আল সংবাদমাধ্যমকে জানান, মামলা-মোকদ্দমাসহ জায়গা-জমির আইনি সহায়তার নামে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে মাহমুদ আলী টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন।বিভিন্ন মানুষের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে দুটি ভুয়া আইডি কার্ড, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাগজপত্র, মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড জব্দ করে র্যাব।
র্যাব জানায়, মাহমুদ আলী আগে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরবর্তীতে জমিজমার সার্ভেয়ারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন কিছুদিন। ফলে তার জমিজমার বিষয়ে কিছু ধারণা হয়।
এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করেন।
পাশপাশি মাহমুদ আলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডিবি, সিআইডি, দুদকের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছে বলে বেড়াতেন- ‘আমার কাছে মামলা-মোকদ্দমা সমাধান করা কোনো ব্যাপারই না, তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেব।’
এসময় র্যাবের উক্ত মুখপাত্র দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর ও মামলা দায়েরের কথা জানিয়েছেন। পাশপাশি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি দেখা হবে বলেও সংবাদমাধ্যমকে অবগত করেন৷