জাতীয়তাবাদী বিএনপি দল দেশের পুরানো একটি রাজনৈতিক দল। এই দলটি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব পালন করেছে। তবে বর্তমান সময়ে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে এই দলটি। এমনকি এই দলের অসংখ্য নেতাক্রমীদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। এমনকি অনেকেই একাধিক মামলার শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এবং অনেকেই কা/রা/গারে বন্ধি জীবন-যাপন করছে। সম্প্রতি আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক মাঠে সরব হয়েছে দলটি। এতে করে আরও বেশি বিপাকে পড়েছে দলের নেতাকর্মীরা। এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু তথ্য উঠে এলো প্রকাশ্যে।
দীর্ঘদিন ধরেই মাঠের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নেই বিএনপি। মাঝেমধ্যে হঠাৎ সামনে আসা ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ করছে দলটির নেতাকর্মীরা। এসব ইনডোর অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে গরম বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির নেতারা। কিন্তু এরমধ্যেও নতুন করে বিপদে পড়তে শুরু করেছেন কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের কর্মীরা। সম্প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার সময় সা/ম্প্র/দা/য়িক স/হিং/স/তাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেসব মা/ম/লা হয়েছে তাতে দেড় শতাধিক নেতাকর্মী গ্রে/প্তা/র হয়েছেন বলে দাবি করেছি বিএনপি। অন্যদিকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পুরোনো মামলা সচল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ বিএনপির। দলটির নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা যাতে মাঠে নামতে না পারেন সে কারণে ‘চাপে’ রাখতে এসব মামলা সক্রিয় করা হচ্ছে। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ খালি করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। পুরোনো মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা করা হচ্ছে। যাতে নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।’
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকের মধ্যে গ্রে/প্তা/র আ/ত/ঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মীদের সঙ্গে নেতারাও অনেকে অতীতের মতো গ্রে/প্তা/র এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে চলছেন। সবশেষ গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে প্রতিবাদ মি/ছি/লকে কেন্দ্র করে পু/লি/শ- বিএনপি সং/ঘ/র্ষে/র পর দলটির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গ্রে/প্তা/র হয়েছেন। ওই ঘটনায় পু/লি/শে/র মামলায় আসামি করা হয়েছে দেড় হাজার নেতাকর্মীকে। তার আগের দিন সোমবার দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের এক মামলায় গ্রে/প্তা/রি পরোয়ানা জারি করা হয়। জানা গেছে, দুর্গাপূজার আগে-পরে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্র/দা/য়িক স/হিং/স/তায় এ পর্যন্ত ১২৩টি মামলায় প্রায় ২০ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ইতোমধ্যে গ্রে/প্তা/র হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। যার মধ্যে অনেক বিএনপি নেতাকর্মীও রয়েছেন। বিএনপির অভিযোগ, এসব ঘটনায় যেসব নেতাকর্মীকে গ্রে/প্তা/র করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নিয়ে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রিয় নেতাদের নাম বলানো হচ্ছে।
নোয়াখালীর চৌমুহনীর এক মা/ম/লা/য় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হিন্দুদের মন্দিরে হা/ম/লা/য় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। দলটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, ওই নেতাকে থানায় আ/ট/কে রেখে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত নির্বাচনের আগে আমাদের প্রার্থীদেরও গ্রেপ্তার করেছে। আওয়ামী লীগের লোকজন হা/ম/লা করে আমাদের বিরুদ্ধে মা/ম/লা দিয়েছে। এবার আগেভাগেই শুরু করেছে।’ বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের পর থেকে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীর নামে এক লাখ সাত হাজার মামলা রয়েছে। এসব মামলায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের প্রায় সব নেতাই এসব মামলার আসামি। কারও কারও বিরুদ্ধে শতাধিক মামলাও রয়েছে। এখনও এসব মামলায় অনেকে কা/রা/গারে। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও এসব মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে নেতাকর্মীদের। আবার কেউ কেউ পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেক মা/ম/লা/র বিচারও শুরু হয়েছে। আবার পুরোনো অনেক মামলায় নেতাদের নামে পরোয়ানাও জারি হচ্ছে।
কয়েক বছর আগের মামলায় সম্প্রতি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসব ঘটনায় মূল দলের বাইরে অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে। এদিকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে মাঠে নামার আগে যখন দল গোছানোর চেষ্টা চলছে তখন মামলা নিয়ে টেনশনে পড়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভোটের আগে যে কৌশল অতীতে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ, এবারও সেই পথে হাঁটা শুরু করেছে। লক্ষণ পরিষ্কার। আমাদেরও সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে।’
কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন। এই ঘোষনার পর থেকেই দেশের সকল রাজনৈতিক দল গুলো সরব হয়েছে। এবং আগামী নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কয়েক দফা দাবি তুলেছে। এমনকি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গেও দেশের রাজনৈতিক দল গুলো বেশ কিছু কথা তুলে ধরেছেন সরকারের উদ্দেশ্যে।