Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ৬টি পরামর্শ বিএনপির তৃণমূল নেতাদের

আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ৬টি পরামর্শ বিএনপির তৃণমূল নেতাদের

দীর্ঘ দিন ধরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ভাবে অবহেলিত এবং নি/র্যা/তি/ত বিএনপি দল। এই দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃনমূল পর্যায়ের কর্মীরাও বিভিন্ন মামলায় জর্জরিত। একাক জনের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তাদের নানা অভিযোগ থাকলেও সরকারের বিরুদ্ধে শক্তশালী অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি দলটি। তবে সম্প্রতি দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ সরব হয়ে উঠেছে দলটি। ইতিমধ্যে দলের নেতাকর্মীরা আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বৈঠকও করেছে। এদিকে এই দলটির তৃণমূল নেতারা আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে দুই দফায় ছয় দিনের সিরিজ বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প/ত/ন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন দলটির তৃণমূল নেতারা। এর বাইরেও তাদের কাছ থেকে একাধিক পরামর্শ এসেছে বলে গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল দেশ বলেন, ‘তৃণমূল নেতাদের পরামর্শগুলো আমরা শুনেছি। আমরা দলীয় নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা করে আগামীর করণীয় নির্ধারণ করব।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পরামর্শগুলো আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এসব পরামর্শ আমরা স্থায়ী কমিটির সভায় পর্যালোচনা করব। তারপর আসবে সিদ্ধান্ত। তবে আগামী দিনের করণীয় নির্ধারণে এ ধরনের সিরিজ বৈঠক করে তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ নেওয়ায় তারাও খুশি। প্রতিদিনের বৈঠক থেকে আমরা প্রত্যেকেই এক-দুবার করে বাইরে বের হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বের হননি। পুরো সময় খুবই মনোযোগ দিয়ে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য শুনেছেন। মাঝেমধ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। বলা যায়, এ ধরনের কর্মসূচির কারণে তৃণমূল অনেকটা চাঙ্গা হবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আরও বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে দুই দফায় ছয় দিনের সিরিজ বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তৃণমূল নেতারা দলের হাইকমান্ডকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। ঘুরেফিরে ছয়টি পরামর্শই এসেছে। এগুলো হলো : ১. আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, হতে দেওয়া হবে না; ২. নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে হবে; ৩. নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হবে; ৪. আন্দোলন হতে হবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অধীনে; ৫. আন্দোলনের আগে দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুনর্গঠন কাজ শেষ করতে হবে; ৬. সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন করতে হবে।

বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘দুই দফা বৈঠকে প্রায় তিন শতাধিক নেতা বক্তব্য রেখেছেন। পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। তৃণমূলের নেতারা দলের হাইকমান্ডকে নানাবিধ পরামর্শ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মনোযোগ দিয়ে তা শুনেছেন। বেশিরভাগ নেতা আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামের পক্ষে মত দিয়েছেন। সমাপনী বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, যারা আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা অবশ্যই রাজপথে থাকবেন। যিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষম তাকে আগেভাগে দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে যারা যোগ্য তাদের জায়গা করে দিতে বলেছেন।’

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, প্রথম দফায় গত ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর তিন দিনের সিরিজ বৈঠকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সম্পাদকমণ্ডলী এবং নয়টি সহযোগী সংগঠনের ২৮৬ নেতা অংশ নেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি সভাপতিদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক হয়। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহপ্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলীম। সহযোগিতা করেন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ। অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক করেছিলেন। এরপর তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারই প্রথম সিরিজ বৈঠক করলেন।

বিএনপি দল টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। তবে দলটি ছলমান সকল সংকট মোকাবিলা করে পুনরায় ক্ষমতা দখলের জন্য আপ্রান ভাবে একাজ করছে। এরই লক্ষ্যে দলটির নেতাকর্মীরা নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। অবশস্যে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্রবাচনকে ঘিরে খুবই আশাবাদী দলটি।

About

Check Also

‘আমি তোমাকে ছাড়বো না, শেখ হাসিনা কাউকে ছাড়ে না’: মুখ খুললেন সোহেল তাজ

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাস পর ২০০৯ সালে পদত্যাগ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *