Thursday , October 24 2024
Home / Entertainment / না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেতা ড. ইনামুল হক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেতা ড. ইনামুল হক

বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আজ বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে এই অভিনেতা বেইলি রোডে অবস্থিত তার নিজ বাসভবনে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তার এই মহা প্রস্থানের খবর দেশের গনমাধ্যমে নিশ্চিত করেন তার মেয়ের জামাই এবং অভিনেতা লিটু আনাম।

ড. এনামুল হক অভিনয় জীবনে পদার্পন করেন ১৯৬৮ সালে। ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে নট্যজগতে প্রবেশ করেন। এই নাটকটি প্রযোজনা করেছেন মুস্তাফা মনোয়ার। সে বছরই তিনি নাট্যকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তার লেখা প্রথম নাটকের নাম ‘অনেকদিনের একদিন’। বিশিষ্ট অভিনেতা এবং নাট্য নির্মাতা আবদুল্লাহ আল মামুন টেলিভিশনের জন্য নাটকটি নির্মাণ করেন।

অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ অভিনেতা বলেন—‘বাসায়ই ছিলেন, হঠাৎ পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্রুত শান্তিনগর ইসলামী ব‌্যাংক হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসকরা তাকে মৃ’/ত ঘোষণা করেন। আনুমানিক বেলা ৩টার দিকে প্রয়াত হন তিনি।’

ড. ইনামুল হকের দেহ কোয়ান্টামে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গোসল শেষ করে নিয়ে যাওয়া হবে বেইলী রোডে। এরপর শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়া হবে। তবে কোথায় কখন দা’ফন করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন নাসিম।

এ পর্যন্ত টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক লিখেছেন তিনি। তার লেখা আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’ ও ‘কে বা আপন কে বা পর’। মঞ্চের জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘বিবাহ উৎসব’। এটি লিখেছিলেন উদীচীর জন্যে। তার নিজ দল নাগরিক নাট্যাঙ্গনের জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘গৃহবাসী’। ১৯৮৩ সালে লেখা হয় নাটকটি। ঢাকার মঞ্চে বেশ আলোচিত নাটক এটি।

নাটক-আত্মজীবনী লেখা, বই পড়া ছাড়াও বাসায় নাতি-নাতনিদের সঙ্গে গল্প করেও সময় পার করেছেন ড. ইনামুল হক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘পড়ার জন্য কতো বই রয়েছে! লেখার কতো কী বাকি! অনেক কিছুই বাকি রয়ে গেল!’

উল্লেখ্য, এনামুল হক একজন বাংলাদেশী অভিনেতা এবং শিক্ষাবিদ। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। চারুকলায় অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এনামুল হক তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ১৯৬৩ এবং ১৯৬৪ সালে রসায়নে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে বুয়েটের রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। সেই সময় তিনি পিএইচডি অর্জন করেন। সিন্থেটিক জৈব রসায়নের ক্ষেত্রে ১৯৭৬ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৭৬ সালের জুন থেকে ১৯৭৭ সালের মে মাস পর্যন্ত একই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিনাল কেমিস্ট্রিতে পোস্ট-ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন।

About

Check Also

আমি আওয়ামী লীগের কেউ হলে গ্রেপ্তার করুন: ইলিয়াস কাঞ্চন

রোড এক্সিডেন্টে তার প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *