Thursday , October 24 2024
Home / Countrywide / দরিদ্র বাবার জন্য সুখবর দিতে পারায় আমি অনেক খুশি: ফাহিমা

দরিদ্র বাবার জন্য সুখবর দিতে পারায় আমি অনেক খুশি: ফাহিমা

দূর্নীতির অনিয়ম বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের নিত্যেদিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে। সরকারে বেসরকারি বিভিন্ন খাতেরই কিছু অসাধু ব্যক্তি এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। সরকারি চাকরি ক্ষেত্রেও এই অনিয়ম বিদ্যমান। তবে সম্প্রতি ঘুষবিহীন পু/লি/শ বাহিনীতে কনেষ্টবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন অনেকেই। এদেরই মধ্যে একজন ফাহিমা আক্তার। ঘুষবিহীন নিয়োগ পেয়ে খুশীতে কাঁদতে কাঁদতে জানালেন নিজের স্বপ্ন পূরনের কথা।

আমার বাবা দারোয়ানের চাকরি করেন। খুব কষ্টে চলে পাঁচ সদস্যের সংসার। মাত্র ১১২ টাকা খরচ করে পু/লি/শ কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। আমার বাবার স্বপ্ন পূরণে আমি এগিয়ে যেতে চাই। দেশ ও মানুষের সেবা করার জন্য আমি কাজ করে যাব। ঘুষ ছাড়া দারোয়ানের মেয়ের পু/লি/শে চাকরি হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো ঢাকা পোস্টকে বলছিলেন নোয়াখালী সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আবদুর রহমানের (৪০) মেয়ে ফাহিমা আক্তার। ফাহিমা আরও বলেন, ছোটবেলায় বাবা দারোয়ানের ডিউটি শেষে বাড়ি ফিরলে আমি বাবার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। আমার তখন থেকেই স্বপ্ন দেশের জন্য কাজ করব। তাই পু/লি/শ কনস্টেবল হিসেবে আবেদন করেছি। যেহেতু কোনো ঘুষ নিয়ে চাকরিতে ঢুকিনি তাই আমিও কোনো দিন ঘুষ নেবো না।

আশরাফুল ইসলাম (২০) নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের গাংচিল গ্রামের বোরহান উদ্দিনের ছেলে। তিনি বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। দরিদ্র বাবার জন্য সরকারি চাকরির সুখবর দিতে পারায় আজ আমি অনেক খুশি। এভাবে বিনা টাকায় সরকারি চাকরি পাব কখনও ভাবিনি। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলার ট্রেইনি রিক্রুট পু/লি/শ কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। জেলা পু/লি/শ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ নভেম্বর থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে জেলার ৬৫ তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেওয়া হয়। ব্যাংক ড্রাফটে ১০০ টাকা জমা দিয়ে পু/লি/শে/র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রায় ২৬০০ তরুণ-তরুণী অংশ নেন।

নোয়াখালীর পু/লি/শ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যুগোপযোগী পু/লি/শ করার জন্য আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) স্যার পু/লি/শ নিয়োগ পরীক্ষায় আধুনিকায়ন করেছেন। এমন একটি যুগান্তকারী পদ্ধতিতে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে চাইলেও অনিয়ম করার সুযোগ নেই।
মো. শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগে আমি কমিটমেন্ট করেছিলাম, নিয়োগ প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছ হবে। আমার বিশ্বাস, আমার কমিটমেন্টের এক চুলও ব্যত্যয় হয়নি। শতভাগ স্বচ্ছভাবে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে বলেই রিকশাওয়ালা, কাঠমিস্ত্রি, পান বিক্রেতা, দিনমজুর ও বর্গাচাষির ছেলে-মেয়েরা নিয়োগের জন্য উত্তীর্ণ হয়েছেন। এদের অনেকের ৪০-৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার সক্ষমতাও নেই। কেবল যোগ্য প্রার্থী হিসেবেই তারা নিয়োগ পেয়েছেন।

বর্তমান সরকার দেশের দূর্নীতির অনিয়ম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। এমনকি এই বিষয়ে জিরো ট্রলারেন্স নীতি ঘোষনা করেছেন। এবং এই অনিয়ম প্রতিরোধে দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রতি দিয়েছেন কঠোর নির্দেশনা। এরই লক্ষ্যে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

About

Check Also

বাংলাদেশের কী লাগবে জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে অর্থ সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় অঙ্ক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *