Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Politics / লাইভে এসে ফলাফল প্রত্য়াখ্য়ান কাদের মির্জার, অভিযোগ তুললেন খোদ ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে

লাইভে এসে ফলাফল প্রত্য়াখ্য়ান কাদের মির্জার, অভিযোগ তুললেন খোদ ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে

সারাদেশে সপ্তম ও শেষ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা আজকে রাত সাড়ে আটটায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লাইভে এসে এক ভিডিওবার্তায় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্য়াখ্য়ান করেছেন। পাশাপাশি তিনি এই নির্বাচনকে ‘সাজানো’ বলেও অভিহিত করেন।

ভোটগ্রহণ শেষে আজ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি আঙুল তুলে বলেছেন, এই পাতানো নির্বাচন তিনি মানেন না।

আজ সোমবার কোম্পানীগঞ্জের আটটি ইউপিতে নির্বাচন হয়। সেখানকার প্রার্থীদের কোনো দলীয় প্রতীক ছিল না। যাঁরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে চারজন কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের অনুসারী। কাদের মির্জার অনুসারী তিনজন আর একজন জামায়াত–সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লাইভে আসেন কাদের মির্জা। প্রশাসনের প্রতি অভিযোগ তুলে তিনি বলেন,‘পরিকল্পিতভাবে এই নির্বাচন হবে জানলে এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়াতাম না। এই এলাকায় ডিসি–এসপির সাজানো নির্বাচন আজ এখানে হয়ে গেছে। চরের ভূমি দখলের মতো ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী মহোদয়ের (ওবায়দুল কাদের) তিন ভাগনেকে জেতানোর জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হয়েছে।’

তিনটি ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ওবায়দুল কাদের ও কাদের মির্জার তিন ভাগনে। তাঁরা মিজানুরের অনুসারী। এর মধ্যে রামপুরা ইউপিতে জয় পেয়েছেন সিরাজিস সালেকিন ও চর ফকিরা ইউপিতে জয় পেয়েছেন জয়দল হক। পার্বতী ইউপিতে জামায়াত–সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন কাদেরের আরেক ভাগনে মাহবুবুর রশিদ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লাইভে কাদের মির্জা লাইভে উঠে আসে তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধিতার প্রসঙ্গও। তিনি বলেন,‘গোলাগুলি করে হিন্দু ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে এখানে (চর পার্বতী ইউপি) জামায়াতের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সহযোগিতা করেছে এখানকার প্রশাসন। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত এখানে চেষ্টাও করেছে জামায়াতের প্রার্থীকে হারিয়ে তাঁর ভাগনেকে জেতানোর জন্য। সে ৩ নম্বর ছিল বিধায় সেটা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়ে রামপুরে ৭০০ ভোটে এক ভাগনেকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘চর ফকিরাতে সকাল বেলায় তিনটি কেন্দ্র দখল করে মন্ত্রীর আরেক ভাগনে ফুফাতো বোনের ছেলে জায়দল হককে সেখানে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে দেখেন, এই নির্বাচন করার কী দরকার ছিল। আপনি ঘোষণা দিয়ে নিয়ে যেতেন, আপনার খেয়ালখুশিমতো জিতিয়ে নিতেন। মুছাপুরে আইয়ুব আলী জিতেছেন, কান্নাকাটি করে প্রশাসনকে টাকা দিয়ে। ওবায়দুল কাদেরের সাজানো নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা আগামীকাল আমাদের নেতাদের নিয়ে বসব, সিদ্ধান্ত নেব। আজ আমাকে দাফন করেছে কোম্পানীগঞ্জ। আমার ৪৮ বছরের রাজনীতি। জীবনে রাজনীতিতে কোনো পদপদবিতে যেতে পারিনি, সে দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে গেছি, সেখানেও পড়ালেখা করতে দেয়নি।’

১৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের লাইভ বক্তৃতায় কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘আমাদের জন্য রাজনীতি আসেনি। রাজনীতিতে অস্ত্রের প্রয়োজন, টাকার প্রয়োজন। ওবায়দুল কাদের সাহেবেরা পারে না, এমন কোনো কাজ নেই। এটা তাঁদের পক্ষেই সম্ভব। আমার ছেলেকে দুবার মেরেছে। একবার সহানুভূতিও দেখায়নি। ওবায়দুল কাদের এত হিংস্র। তাঁর ভাগনেকে দিয়ে আমার ছেলের ওপর আঘাত করেছে রামপুরে।’

এদিকে কাদের মির্জার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সোমবার বলেন, ‘উনি ওনার মতো করে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা কী ধরনের নির্বাচন করেছি, তা কোম্পানীগঞ্জের মানুষ দেখেছেন।’

নির্বাচনের আগেও বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় ব্য়ক্তিবর্গ ও বিশেষত বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ এবং সমালোচনা করে আলোচিত হয়েছিলেন কাদের মির্জা।

About

Check Also

‘আ.লীগ রঙ দেখছে, কিন্তু রঙের ডিব্বা দেখেনি’ দল যে সিদ্ধান্ত নেবে মাথা পেতে নেব

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, বিএনপি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *