করোনা ভাইরাসের থার্ড ওয়েভ বা অমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের আবির্ভাবে যখন পুরো পৃথিবী টানা তৃতীয় বছরের মত শিক্ষা, ব্য়বসা, অর্থনীতির মত গুরুত্বপূর্ণ সব সেক্টরের ক্ষতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে তখনই পুর্ব ইউরোপে বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। ‘ইউরোপের শস্য়ক্ষেত্র’ নামে পরিচিত ইউক্রেনের সীমান্তজুড়ে প্রতিবেশি রাষ্ট্র রাশিয়া এক লাখেরও বেশি সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। যথারীতি রাশিয়ার এই সৈন্য় সমাবেশের সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে কোনো দেরি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে কোন অভিযান চালালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সহ নানা ব্যবস্থার হুমকি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম ইউরোপ আরও একটি বড় আকারের যুদ্ধের মুখোমুখি – এমন আশংকা করছেন অনেকেই।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ইউক্রেনকে ঘিরে এই উত্তেজনা এবং সংঘাত আসলে কেন আর এর উৎসই বা কী? রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসলে কী চান? ন্য়টো জোটও বা কী করছে? পাঠকদের সুবিধার্থে ইউক্রেন সংকট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝার জন্য় এই দুইটি রাষ্ট্রের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। একসময়ের সুবিশাল সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্য়তম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ছিলো ইউক্রেন। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েতের পতনের পর আরও অনেক দেশের মতই এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পূর্ব ইউরোপের অতীতে কম্য়িউনিস্ট ও বর্তমানে ক্য়াপিটালিস্ট দেশগুলোর মত ইউক্রেনও ন্য়টো জোটে যোগদান করার চেষ্টা করে আসছিলো স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই। একসময়ে নিজেদের অধীনে থাকা অন্য়ান্য় দেশগুলোর ক্ষেত্রে বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিলেও নিকট-প্রতিবেশি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই স্পষ্ট বিরোধিতা জানিয়ে আসছিলো রাশিয়া। আয়তনে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশটির পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের বিরাট অঞ্চলের সাথে রয়েছে রাশিয়ার সীমান্ত সংযোগ। সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি রাজনৈতিক মতাদর্শী দেশের এত কাছাকাছি অবস্থান কখনোই যে খুব প্রীতিকর হবে না সেটার আশঙ্কা করা হচ্ছিলো শুরু থেকেই। গত ৩০ বছরের ঘটনাপ্রবাহ বারবার সেই আশঙ্কাকেই সত্য়িতে পরিণত করেছে।
পূর্ব ইউরোপের অন্য়ান্য় কমিউনিস্ট দেশের মতো ইউক্রেনেও দুটি রাজনৈতিক ধারা বেশ স্পষ্ট। একটি অংশ পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে চায়। পাশাপাশি এই অংশ নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য ন্য়টো সামরিক জোটের সদস্য হতেও আগ্রহী। অপর অংশ রুশ প্রভাব বলয়ে থাকার পক্ষপাতী। কারণ ইউক্রেনের জনসংখ্যার বিরাট অংশ রুশ ভাষাভাষী আর তারা জাতিগতভাবেও রুশ। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক যোগাযোগ। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে তীব্র রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব ইউক্রেনে অবস্থিত ইউক্রেনের দুটি প্রদেশ দনেৎস্ক ও লুহানস্ক ইউক্রেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ইউক্রেনীয় সরকার দনেৎস্ক ও লুহানস্কের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য সেখানে সৈন্য প্রেরণ করে। এর ফলে ইউক্রেনের সঙ্গে দনেৎস্ক ও লুহানস্কের যুদ্ধ আরম্ভ হয়, ‘দনবাস যুদ্ধ’ নামে পরিচিত যে যুদ্ধ এখনো চলমান।
যদিও ইউক্রেনীয় সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি কোনো যুদ্ধ নয়। ২০১৪–২০১৮ সাল পর্যন্ত তারা এই যুদ্ধকে ‘পূর্ব ইউক্রেনে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান’ নামে অভিহিত করত। অন্য়দিকে দনেৎস্ক ও লুহানস্কের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই যুদ্ধটি তাদের ওপর ইউক্রেনীয় সরকারের আক্রমণ এবং তারা কেবল আত্মরক্ষার জন্য়ই লড়াই করছে। দুটি অঞ্চলই ছিলো রুশ অধ্য়ুসিত। ফলে এই যুদ্ধে রাশিয়ান সরকারের সম্ভাব্য় সব রকমের সাহায্য়ই পেয়ে এসেছিলো এরা।
যুদ্ধ শুরুর বছরেই বিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ প্রথমে ক্ষমতাচ্য়ুত ও পরবর্তীতে দেশত্য়াগে বাধ্য় হন। একদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য় চুক্তি করতে চাওয়া আর অন্য়দিকে মস্কোর সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে যাওয়া প্রেসিডেন্টের এই দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার পরিণাম শেষ পর্যন্ত ভালো কিছু বয়ে আনলো না ইউক্রেনবাসীর জন্য়। দনবাস যুদ্ধের মাধ্য়মে দীর্ঘকালীন যে অশান্তি শুরু হলো তার চূড়ান্ত ফল হিসেবে ২০১৪ সালেই ‘ক্রিমিয়া’ নামক ভূ্খন্ড চলে গেলো রাশিয়ার দখলে, আদতে যা ছিলো ইউক্রেনের একটি অঞ্চল।
এখন প্রশ্ন হলো আয়তনে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ হওয়ার পরও কেন রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলে আগ্রহী হলো?
রাশিয়া যত বড় দেশই হোক, তাদের সবচেয়ে বড় সমস্য়া হলো সারা বছর সচল রাখা যায় এমন বন্দর তাদের প্রায় নেই বললেই চলে। ক্রিমিয়ার সেভাস্তাপোলে রাশিয়ার নৌ-ঘাঁটিটি কৌশলগত কারণেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার ঢোকার পথও হচ্ছে এই বন্দর। একারণে তারা কোনভাবেই সেটি হাতছাড়া হতে দিতে চায়নি। ঐতিহাসিকভাবেও ক্রিমিয়া ছিলো রাশিয়ারই একটি অংশ। এই অঞ্চলের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষও জাতিগত রুশ। ১৯৫৪ সালে সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ এটি হস্তান্তর করেন তৎকালীন সোভিয়েত রিপাবলিক ইউক্রেনের কাছে। কিন্তু মস্কো যখনই দেখলো যে ইউক্রেন তাদের প্রভাবের বাইরে চলে গিয়ে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সাথে বাণিজ্য়চুক্তি করতে আগ্রহী, তখন প্রেসিডেন্ট পুতিন সেখানে হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন। অন্য়দিকে যখন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের মন জয় করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা ভেঙ্গে বেরিয়ে এলেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হলো গণবিক্ষোভ। প্রেসিডেন্টের পতনের পর নতুন সরকার এমন কিছু ডিসিশন নেয়, যা পুতিনকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। পরবর্তীতে গণভোটেও ক্রিমিয়ার অধিবাসীরা রাশিয়ার অংশ হিসেবে থাকতে চাইলে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন এই অঞ্চল হাতছাড়া করতে বাধ্য় হয়।
ইউক্রেন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ন্য়াটোর সদস্য় হয়নি। তবে তাদের সঙ্গে ন্য়াটো তথা আমেরিকার সখ্যতা আছে। ভবিষ্যতে কোন একদিন তারা ন্য়াটো জোটের সদস্য় হবে, এমন বোঝাপড়াও আছে। তবে রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে এরকম নিশ্চয়তা চায়, যেন এটা কখনওই না ঘটে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো তা দিতে রাজী নয়। অন্য়দিকে ইউক্রেনের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ জাতিগতভাবে রুশ। তাদের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আছে। রাশিয়াও ট্য়াকটিক্য়ালি ইউক্রেনকে বাড়ির পেছনের আঙ্গিনা বলে বিবেচনা করে। প্রেসিডেন্ট পুতিন মনে করেন, পশ্চিমা শক্তি আসলে ন্য়াটো জোটকে ব্যবহার করে চারিদিক থেকে রাশিয়াকে ঘিরে ফেলছে। পূর্ব ইউরোপে এই সামরিক তৎপরতা তিনি একদমই পছন্দ করছেন না। পুতিনের অভিযোগ অনুযায়ী ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ন্য়াটো জোটকে ইস্টার্ন ইউরোপে সম্প্রসারণ করা হবে না বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটি তারা রাখেনি। তবে প্রতিরক্ষাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে ন্য়াটোও রাশিয়ার এই কথা প্রত্যাখ্যান করেছে। ন্য়াটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, তাদের সামরিক জোটের জবাবও মস্কোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তিনি বলেন, রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়গুলো শুনতে রাজি থাকলেও এটা বুঝতে হবে যে প্রত্যেকটি দেশের তার মতো করে নিজের প্রতিরক্ষার পথ বেছে নেয়ার অধিকার আছে।
রাশিয়ার মত সামরিক শক্তি কেন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন?
ব্রিটিশ সাংবাদিক টিম মার্শাল তার লেখা বেস্টসেলার ‘প্রিজনার্স অব জিওগ্রাফি’ বইতে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, অনেক ভাবতে পারেন রাশিয়ার মতো এত বড় একটি সামরিক ক্ষমতাধর দেশকে কে আক্রমণ করতে চাইবে। কিন্তু রাশিয়া নিজে বিষয়টি সেভাবে দেখে না। এর যথেষ্ট ভিত্তিও আছে। গত পাঁচশো বছরে রাশিয়া বহু বিদেশি শক্তির আক্রমণের মুখে পড়েছে, আর এই সবগুলো আক্রমণই এসেছে উত্তর ইউরোপের সমতল ভূমি দিয়ে।
১৬০৫ সালে পোলিশরা আক্রমণ চালিয়েছিল এই পথ ধরে। এর পরে আসে সুইডিশরা। ১৮১২ সালে নেপোলিয়নের নেতৃত্বে হামলা চালায় ফরাসীরা। জার্মানরা রাশিয়ায় অভিযান চালিয়েছে দুবার – ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, আবার ১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। ১৮১২ সালে নেপোলিয়নের সময় হতে হিসেব করলে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত গড়ে প্রতি ৩৩ বছরে রাশিয়াকে উত্তর ইউরোপের সমতলভূমিতে একবার করে যুদ্ধ করতে হয়েছে। কাজেই রাশিয়ার ধারণা, তাদের দেশের জন্য কোন নিরাপত্তা হুমকি যদি থেকে থাকে, সেটি এই পথেই আসবে।
১৯৯০ এর দশকের শুরুতে সোভিয়েত ইউনিয়ন যে ভেঙ্গে গিয়েছিল, সেটিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার জন্য এক ভূরাজনৈতিক বিপর্যয় বলে মনে করেন। এরপর হতে রাশিয়া কেবল উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে, কীভাবে ধীরে ধীরে সামরিক জোট ন্য়াটো চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলছে। ১৯৯৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি এবং পোল্যান্ড যোগ দিল নেটোতে। ২০০৪ সালে তাদের পথ অনুসরণ করলো বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাতভিয়া, লিথুয়েনিয়া, রোমানিয়া এবং স্লোভাকিয়া। ২০০৯ সালে যোগ দিল আলবেনিয়া। এই দেশগুলো এক সময় হয় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ অথবা ওয়ারশ সামরিক জোটের সদস্য।
এছাড়াও জর্জিয়া, মলদোভা বা ইউক্রেনও পারলে ন্য়াটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার কারণেই তাদের যোগ দেয়া হয়নি। কারণ এই তিনটি দেশেই রুশ-পন্থী মিলিশিয়াদের শক্ত অবস্থান আছে। এই দেশগুলোর যে কোন একটি যদি ন্য়াটোতে যোগ দেয়, তা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ হিসেবে কাজ করতে পারে।
টিম মার্শাল লিখেছেন, গত শতকে স্নায়ুযুদ্ধের দিনগুলোতে কে ভাবতে পেরেছিল মস্কো হতে মাত্র কয়েকশো’ মাইল দূরে পোল্যান্ডের মাটিতে বা বাল্টিক দেশগুলোতে মার্কিন সেনা মোতায়েন করা থাকবে? তার মতে, ইউক্রেনের ন্য়াটোতে যোগ দেয়া মানে যুক্তরাষ্ট্র বা নেটোর সামরিক বাহিনী একেবারে রাশিয়ার পেটের ভেতরে এসে অবস্থান নেয়া। নিজের দোরগোড়ায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক উপস্থিতিকে রাশিয়া সঙ্গত কারণেই এক বিরাট নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।
এদিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেন প্রশ্ন ইউরোপীয় নেতারা সবাই একমত। তবে বিভিন্ন দেশ যে ধরণের সমর্থন দেবে বলে কথা দিচ্ছে, তার মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। এরমধ্য়েই ন্য়াটো ভুক্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও সবরকমের সামরিক সহায়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জার্মানি। এই ডিসিশনের পিছনে সে দেশের ফরেন এফেয়ার্স পলিসি যতটা বড় কারণ, তার চেয়েও বড় কারণ রাশিয়ার উপর জার্মানি তথা ইউরোপের গ্য়াস নির্ভরশীলতা। আবার রাশিয়ার পুরো গ্য়াস এক্সপোর্টের ৪০ পার্সেন্টেরও বেশি হয়ে থাকে এই জার্মানির মাধ্য়মেই। যদিও ইউক্রেনে অভিযান চালানো হলে এই সাপ্লাই লাইন বন্ধ করা হবে বলে ওয়ার্নিং দিয়েছে ওয়াশিংটন, কিন্তু এতে ন্য়াটো জোটের দেশগুলোর ক্ষতি রাশিয়ার চেয়ে কোনো অংশে কম হবে না। অন্য়দিকে রাশিয়ার প্রতি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে রুশ ইকোনোমিতে তার ভয়াবহ ইফেক্ট যেমন পরতে পারে, ঠিক তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা আমেরিকার আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোকেও।
সবমিলিয়ে গত কয়েক সপ্তাহের টাইমলাইন অনুযায়ী ইউক্রেনে রাশিয়ার আরও একটি সামরিক অভিযানের সম্ভাবনাকে কিছুতেই উড়িয়ে দেওয়া যায়না। জিওগ্রাফিক বা ন্য়াচারাল যেকারণেই হোক, বারবার যুদ্ধের সম্মুখীন হওয়া ইউক্রেনের ইতিহাসও আরেকটি রক্তান্ত প্রান্তর দেখার পূর্বাভাসই দিচ্ছে। কিন্তু এখন যেখানে ইউক্রেনের প্রতি আমেরিকার সরাসরি সমর্থন আছে সেখানে অভিযান চালানোর আগে দ্বিতীয়বার ভেবে নেওয়াই মস্কোর জন্য় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ বলা তো যায়না; প্রায় একই ভাষা, সমাজ ও সংস্কৃতির দুইটি প্রতিবেশী দেশ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ না শেষ পর্যন্ত এর চেয়েও মারাত্মক কোনো পরিণতি নিয়ে আসে।