১৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক ও পরীক্ষা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইসতিয়াক হোসাইনের নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইলের ‘স্টোরি’ তে ২৭ তরিখে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মাস্টার্স-২০২০ এর ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শেয়ার করা দেখা যায়!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিশারিজ বিভাগের মাস্টার্স-২০২০ এর ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের এফএমএমসি-৬৪১ কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গতকাল বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওই শিক্ষকের ফেসবুকে দেওয়া প্রশ্নপত্রের একটি স্ক্রিনশর্ট প্রকাশিত হওয়ায় আসন্ন পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মণ্ডল।
পরীক্ষার আগেই ফেসবুক স্টোরিতে প্রশ্নপত্র দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ইসতিয়াক হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষা এবং প্রশ্নপত্রের বিষয়টি অনেক স্পর্শকাতর বিষয়। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতির অনুমতি ব্যতিত আমি কোনো কথা বলতে রাজি নই।’
একইসঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মোবাইল ফোনে সংরক্ষণের বিষয়টি কতটুকু যৌক্তিক এ বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা সেই প্রশ্নপত্র বাতিল করে পরীক্ষা স্থগিত করেছি।’
প্রশ্নপত্র মোবাইলে সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার বিষয়গুলো খুবই স্পর্শকাতর। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা পরীক্ষা কমিটির দায়িত্ব। তিনি এটা লঙ্ঘন করেছেন। এটা অবশ্যই একটি অপরাধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২৭ তারিখ এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আমরা পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা জরুরি মিটিং করে এই প্রশ্নপত্র বাতিল করেছি। আপাতত ওই পরীক্ষা স্থগিত। এরই মধ্যে নতুন করে প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে ফিশারিজ বিভাগের সভাপতি এম মনজুরুল আলম বলেন, ‘পরীক্ষার সার্বিক বিষয় দেখাশুনা করেন পরীক্ষা কমিটি। তবে, আমি বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে। কিন্তু, প্রশ্নপত্র মোবাইলে সংরক্ষণ করা তার উচিত হয়নি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আলমগীর হোসেন বলেন সরকার বলেন, ‘এ বিষয়ে বিভাগ থেকে অফিসিয়ালি আমাদেরকে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে বিভাগ থেকে জানানো হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদেরকে এখনো কিছু জানান হয়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি আমাদের নিকট আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রসঙ্গত বিভিন্ন সময়ে বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় এমন ঘটনা এর পূর্বে কখনো দেখা যায়নি।