অপরাধী ধরা ছোটখাটো কোনো কাজ নয়, এর পেছনে অনেক পরিশ্রম দিতে হয় পুলিশকে (police)। এমনকি অপরাধী ধরতে গিয়ে অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী এমনকি সাধারণ কর্মীর ভেসও ধরতে দেখা যায় পুলিশকে। ঠিক সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি লেগুনার হেলপার সেজে আসামি ধরে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে এলেন যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক বিলাল আল আজাদ (Bilal)।
জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি রাজধানীর মেয়র হানিফের ফ্লাইওভারে (Hanif Flyover) অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ পড়ে ছিল। পরে জানা যায় তার নাম মহির (Mohir) উদ্দিন। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে তাকে একটি চলন্ত লেগুনা থেকে ছুড়ে মারার দৃশ্য দেখা গেছে। কিন্তু ফুটেজে লেগুনার (Laguna) রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট দেখা যায়নি। লেগুনার খোঁজে অবশেষে হেলপারের (চালকের সহকারী) কাজ নেন যাত্রাবাড়ী (Jatrabari) থানার উপ-পরিদর্শক বিলাল আল আজাদ।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিলাল আল আজাদ জানান, টানা চার দিন যাত্রাবাড়ী ও আশপাশের প্রায় ৩০০ লেগুনার মধ্য থেকে সেই লাল পাদানিওয়ালা লেগুনা দেখা গেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মহির উদ্দিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন মঞ্জুর, আব্দুর রহমান, রিপন ও রুবেল।
তিনি বলেন, “সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে একটাই ক্লু ছিল, লাল পাদানিওয়ালা লেগুনা। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চলে। তদন্তের স্বার্থে পূর্ব পরিচিত লেগুনা স্ট্যান্ডের একজন লাইনম্যানের মাধ্যমে সাইনবোর্ডে গিয়ে পরিচয় গোপন করে লেগুনার হেলপারের চাকরি নিয়েছি। আমি ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত হেল্পার হিসাবে কাজ করেছি। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে হেলপারের কাজ করতাম। এভাবে প্রায় ৩০০ লেগুনা চেক করি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কদমতলীর একটি গ্যারেজে লাল পাদানিওয়ালা লেগুনা পেলাম। কিন্তু এখানেও অন্য বিপর্যয় আছে। অসুস্থতার কারণে লেগুনার চালক গত ২১ জানুয়ারি মালিকের কাছে জমা দিয়ে নিজ গ্রাম মাদারীপুরে চলে যান।
বিলাল আল আজাদ (Bilal Al Azad) বলেন, পরে কদমতলীর গ্যারেজ থেকে জানতে পারি ২২ জানুয়ারি রাতে লেগুনার চালক মঞ্জুর ও তার হেলপার আবদুর রহমান (Abdur Rahman) ছিলেন। দুজনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও তাদের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল, আবদুর রহমান বাসটির হেল্পারি করেছেন। পরে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়। আব্দুর রহমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সাইনবোর্ড থেকে মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রুবেল ও রিপনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে মহিরকে চলন্ত লেগুনা থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে বিলাল আল আজাদের এই সাহসী ঘটনায় এখন তিনি ভাসছেন সারা দেশের প্রশংসায়। সকলেই তাকে প্রসংশায় ভাসাচ্ছেন তার নামে করছেন অনেক ইতিবাচক মন্তব্যে। শুধু সাধারন মানুষ নয় তার উপরের অফিসাররাও এ নিয়ে হয়েছেন বেশ খুশি। জানা গেছে তার জন্য করা হতে পারে পুরষ্কারের ব্যবস্