Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / জানা গেল, কত বেতন পেতেন সেই ওসি প্রদীপ, ও তার এত সম্পদের উৎস কী
OC Pradeep

জানা গেল, কত বেতন পেতেন সেই ওসি প্রদীপ, ও তার এত সম্পদের উৎস কী

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজারের (Cox’s Bazar) টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের (Sinha Mohammad Rashed Khan) নিহতের ঘটনায় পুলিশের (police) দায়ের করা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (OC Pradeep)। তবে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের পরপর জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক উঠে আসে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর সেই ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসে

ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট প্রদীপ (OC Pradeep) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ (Riaz) উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ অর্জন, সম্পদ গোপন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

এরপর ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদের তথ্য দেয় দুদক। দুর্নীতি দমন সংস্থার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান প্রতিবেদনে ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি করণের (Chumki) নামে ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সম্পদ অর্জনের জন্য তার আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই।

দুদকের তদন্তের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, প্রদীপ কুমার দাস (OC Pradeep) ১৯৯৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে একজন সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগদান করেন যার মূল বেতন মাত্র ২২৫০ টাকা, যার মোট মাসিক বেতন ৪৪৮০ টাকা।

দুদকের তদন্তের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, সরকার ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বেতন স্কেল বাড়ালেও একজন উপ-পরিদর্শকের মোট বেতন ১০,৩৬০ টাকার বেশি হয়নি। আর ২০০৯ সালের বেতন স্কেলে একজন পরিদর্শকের বেতন স্কেল ছিল ১১ হাজার থেকে ২০ হাজার ৫৭০ টাকা।

একজন পুলিশ (police) পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০০৫ সালের বেতন স্কেলে যে কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন থেকে জীবিকা নির্বাহ করা প্রায় কঠিন ছিল। ২০১৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী একজন পুলিশ পরিদর্শকের বেতন ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা। ওসি প্রদীপকেও একই স্কেলে বেতন দেওয়া হয়।

দুদকের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ওই ছয় বছরে ৬০ হাজার টাকা বেতন স্কেল হিসাব করলেও এই সময়ে পুরো বেতন না দিলে অঙ্কটা দাঁড়াবে ৪৩ লাখ টাকা। তবে তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়া সারাজীবন সরকার থেকে যে বেতন পেয়েছেন তা খরচ না করে খরচ করলেও এক কোটি টাকার বেশি হবে না।

দুদকের তদন্তের ঘনিষ্ঠ সূত্র আরও জানায়, ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে যত সম্পদ পাওয়া গেছে তার চেয়ে অন্তত কয়েকগুণ বেশি সম্পদের মালিক ওসি প্রদীপ, যা স্বল্প সময়ে আনতে পারেনি দুদক।

দুদকের তদন্তে আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ওসি প্রদীপের সম্পদের সব তথ্য দুদকের কাছে রয়েছে তার স্ত্রী চুমকি করণের নামে। তার নিজের নামে কোনো সম্পদ নেই। এছাড়া ওসি প্রদীপ তার শ্বশুরের নামে একটি ছয়তলা বাড়ি কিনে স্ত্রীর নামে দানপত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। আসলে এই বাড়িটি প্রদীপের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি।

অনুসন্ধানে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে উঠে আসে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর সেই আলোকে জানা যায়, শুধু অবৈধভাবে টাকাই উপার্জন করেননি, অন্যায় ভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করতেও দ্বিধা করেননি ওসি প্রদীপ। প্রতিদিনই নির্যাতিত শত শত পরিবার নামাজ শেষে তার শাস্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছে।

About

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *