জাতীয়
Hits: 1218
এরশাদ মারা যাওয়ার পর এরিকের সঙ্গে খুব একটা দেখা হয়না মা বিদিশার। এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে চাচা জিএম কাদেরের তত্ত্বাবধানে বাসার লোকজন এরিকের দেখাশোনা করতেন। কিন্তু ঠিকমত তার দেখভাল করতেন না তারা এমনই অভিযোগ করেছে এরিক এরশাদ।শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় এরিক এরশাদের একটি ভিডিও পোস্ট করেন বিদিশা। ভিডিওতে মাকে পেয়ে এরিক অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়েছেন বলে জানান।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ার পর থেকে ছেলে এরিক এরশাদকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে জল কম ঘোলা হয়নি এরশাদ পরিবারের মাঝে। যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। এরশাদের মৃত্যুর পরও এরিককে তার মায়ের সঙ্গে থাকতে না দেয়ায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় একা থাকতে হয় তাকে। ফলে বিষন্নতা আর অবহেলায় দিন কাটছে এরশাদ পুত্রের। এর জন্য চাচা গোলাম কিবরিয়া (জিএম) কাদেরকে দুষছেন এরিক। তুলছেন গুরুতর অভিযোগ।অবশেষে মা-ছেলের মিলন হলো। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট, জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় একা হয়ে পড়েছিলেন তার প্রতিবন্ধী ছেলে এরিক এরশাদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এরিকের মা বিদিশা এরশাদ ছেলের সঙ্গে দেখা করতে প্রেসিডেন্ট পার্কে যান।
আরো পড়ুন
Error: No articles to display
মা-ছেলের আবেগঘন মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে পোস্ট করেন বিদিশা। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ’আল্লাহ রহমতে ছেলে এরিককে ফিরে পেয়েছি।’
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় এরিক এরশাদের একটি ভিডিও পোস্ট করেন বিদিশা। ভিডিওতে মাকে পেয়ে এরিক অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, গতকালকে মাকে ডেকে নিয়ে আসছি। আমাকে যেতে দিচ্ছিলো না আমার চাচা। আমি এখন অনেকটা টেনশন মুক্ত। মা এসেছে আমার খেয়াল রাখছে। সেটা নিয়ে আজকে মিডিয়ার লোকজন এসেছে দেখা করতে, কথা বলতে। তাদেরকে উপরে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি মিডিয়ার সাথে কথা বলতে চাই।
জানা গেছে, এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে চাচা জিএম কাদেরের তত্ত্বাবধানে বাসার লোকজন এরিকের দেখাশোনা করতেন। কিন্তু ঠিকমত তার দেখভাল করতেন না তারা।
বৃহস্পতিবার এরশাদের গাড়ির ড্রাইভার এরিকের গায়ে হাত তোলেন। তাকে গালিগালাজ করে ধাক্কা মারেন। এ সময় এরিক কাঁদতে কাঁদতে তার মা বিদিশাকে ফোন দেন। এখনই তার কাছে আসতে বলেন এরিক। ফোন পেয়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে পাগলের মতো ছুটে যান বিদিশা। অনেকদিন পর মা ছেলের মিলন হয়। দুজনে অঝোরে কাঁদেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার মায়ের সঙ্গে দেখা হলে, গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মা-ছেলে।
মাকে কাছে পেয়ে এরশাদ পুত্র বলেন, অনেক ভালো লাগছে, কেমন ভালো লাগছে তা বুঝাতে পারবো না। মা বাবা ছাড়া বেঁচে থাকা অনেক কষ্টের। বাবা নেই, আমার তো এখন মা ছাড়া আপন আর কেউ নাই। যার মা নেই সেই বুঝে তার কি কষ্ট।
এরিক বলেন, এতদিন আমি কেঁদে কেঁদে মাকে খুজেছি। কতবার চাচাকে (জিএম কাদের) বলেছি, আমার মাকে এনে দাও। আমি মার কাছে চলে যাবো। কিন্তু চাচা এনে দেইনি।
মাকে দেখতে চাচা বাধা দিতো জানিয়ে এরশাদ পুত্র বলেন, চাচা জিএম কাদের আমার মাকে দেখতে দেয়নি। কেন দেয়নি, তা উনি ভাল জানেন। নিজের স্বার্থের জন্য আমাকে নিয়ে রাজনীতি আর কি।
চাচার উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এরিক বলেন, মাকে কাছে না পাওয়ার কারণ হলো তার রাজনীতির। নিজের স্বার্থের জন্য যদি আমার মতো অসহায়কে ব্যবহার করা হয় তাহলে এর মত লজ্জাজনক আর কি থাকতে পারে। মাকে দেখতে না দিয়ে চাচা মহাঅন্যায় করেছেন, এজন্য তার শাস্তি হওয়া দরকার বলে মনে করেন এরিক।
তিনি বলেন, আমি এখন থেকে মায়ের কাছে থাকতে চাই। মা সঙ্গে থাকলে আমার আর কোনো দুঃখ কষ্ট থাকবে না। কেউ আমাকে মারতে পারবে না।
আর মা বিদিশা ছেলেকে কাছে পেয়ে অনভূতির কথা জানিয়ে বলেন, ছেলে এখন আমার বুকে, এর চাইতে একজন মায়ের সুখ শান্তি আর কি হতে পারে। সুখের এই অনুভূতি পুথিবীতে কোনো কিছুর বিনিময়ে বুঝানো যাবে না। দুনিয়াতে সন্তানের চাইতে আপন কিছু আর নেই। এখন থেকে এরিক তার কাছে থাকবে বলেও জানান তিনি।
বিদিশা বলেন, যারা মা ছেলের সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করছে আল্লাহ পাক তাদের সন্তান তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে।
এরশাদের সাবেক পত্নী বলেন, এতদিন আমার ছেলেকে তার চাচা দেখতে দেননি। এর চেয়ে অমানবিক কাজ আর কি হতে পারে। পিতৃহারা আমার ছেলেকে বাঁচাতে হলে মার বিকল্প নাই। বাবা মারা যাওয়ার পর যেভাবে ও অবহেলায়, না খেয়ে পড়ে ছিল, আর কিছুদিন হলে ও শেষ হয়ে যেতো।
ঠিকমত খাওয়ানো হয় না, ৩/৪দিনেও গোসল নেই, গায়ে গন্ধ, যে অবস্থা ওর না দেখলে বিশ্বাস হবে না। আমি আমার ছেলেকে এভাবে অনাদরে, অবহেলায় মরতে দিতে পরি না। এরিক আমার কাছে থাকবে। আমি ওকে পেয়ে হ্যাপি। কেউ তার কাছ থেকে এরিককে কেড়ে নিতে পারবে না বলেও জানান বিদিশা।
২০০০ সালে এরশাদ বিদিশাকে বিয়ে করেন। পরে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ও ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপির সরকার বিদিশার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আনে। এরশাদ বিদিশাকে তার প্রথম বিবাহ গোপন রাখার জন্য তালাক দিয়েছিলেন, যে বিবাহ তাদের বিয়ের সময়েও বিদ্যমান ছিল।