চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের (আম্বিয়া) নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেছিলেন ডিসেম্বরের মধ্যে যদি কিছু না হয়, তাহলে আমি চলে যাব চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পয়েন্টে নতুন সেতু প্রসঙ্গে।
এই মুক্তিযোদ্ধা তার কথা রেখেছেন! কালুরঘাট সেতু নিয়ে সরকারি ঘোষণা আসার আগেই চলে গেছেন, তবে শুধু সংসদ থেকেই নয়, একেবারে না ফেরার দেশে।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে নারায়ণ হৃদরোগ রিচার্স ইনইস্টিউট অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

আরো পড়ুন

Error: No articles to display

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংসদ বাদলের ছোট ভাই মনির খান জানান, দুই বছর আগে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন বাদল। হার্টেরও সমস্যা ছিল। দুই সপ্তাহ আগে নিয়মিত চেকআপের জন্য তাকে ভারতে নেওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর থেকে প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির তত্ববধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এমপি বাদলের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন বাদল। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন থেকে তিনি তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদে অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে খ্যাতি পান তিনি।
প্রসঙ্গত,গত ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে কালুরঘাট সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের দাবিতে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমপি বাদল বলেছিলেন, এই শেষ জীবনে আমার আর কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। প্রেমের টানে মানুষ জাত-কূল-মান বিসর্জন দেয়। আমি এবার জনগণের প্রেম রক্ষায় নিজের জাত ছেড়ে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগে যাব। সেতু ছাড়া আমার আর কিছুই চাই না।আমার জীবদ্দশায় কালুরঘাট সড়ক কাম রেল সেতুটির বাস্তবায়ন দেখে যেতে চাই। এ সেতুর জন্য আমি আমার ’সবেধন নীলমণি’ রাজনৈতিক জীবনের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি এমপি পদ থেকে অব্যাহতি নেয়ার কথা পর্যন্ত বলেছি। আমার দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর জন্য আমি তো আর কিছু চাইনি।শেষ পর্যন্ত না পাওয়া সেই বেদনা নিয়েই সবার মাঝ থেকে চলে গেলেন সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দীন খান বাদল।
উল্লেখ্য,ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা বাদল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। বাঙালিদের ওপর আক্রমণের জন্য পাকিস্তান থেকে আনা অস্ত্র চট্টগ্রাম বন্দরে সোয়াত জাহাজ থেকে খালাসের সময় প্রতিরোধের অন্যতম নেতৃত্বদাতা ছিলেন বাদল।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাদল সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। জাসদ, বাসদ হয়ে পুনরায় জাসদে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল গঠনেও বাদলের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

News Page Below Ad

আরো পড়ুন

Error: No articles to display