গত বছর দশেক আগেই পারিবারিক ভাবে কালীগঞ্জ (Kaliganj) উপজেলার খড়াশুনি গ্রামের লিমন পারভেজের (Limon Parvez) সঙ্গে বিয়ে হয় ফারজানা আক্তার মুন্নীর (Farzana Akhter Munni)। মেয়ের খুশির জন্য বিয়ের সময় পারভেজকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার উপহার সামগ্রী শ্বশুর। যখনই কোনো আবদান নিয়ে আসতেন, তা রাখতে রীতিমতো চেষ্টা করতেন মুন্নীর (Munni) পরিবার। তবে এরপরও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পারভেজ। আর এরই জের ধরে এবার জানা গেল, পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে অমানষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পারভেজ নামের আদালতের এক পেশকারের বিরুদ্ধে।
যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধূকে উচ্ছেদ করার অভিযোগও রয়েছে লিমন পারভেজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন।
জানা যায়, বিয়ের সময় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তাকে সোনার আংটি (Gold ring), চেন, গহনাসহ প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার উপহার সামগ্রী দেন। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। চার বছর আগে তাদের ঘর আলো করে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যশোরের শার্শা-বেনাপোল আদালতের উপস্থাপক হওয়ার সুবাদে যশোরে বসবাস শুরু করেন লিমন পারভেজ। চাকরির কথা বলে শ্বশুরবাড়ির কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
এ সময় মুন্নির বাবা তাকে ৬ লাখ টাকা যৌতুক (Dowry) দিতে বাধ্য হন। চাকরি পাওয়ার পর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। কালীগঞ্জের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার পরকীয়া চলছিল। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারলে বিভিন্ন সময় তাকে নিষেধ করে। তারপরও তিনি বহিরাগত হয়েই থাকেন। স্ত্রী মুন্নি (Munni) বাধা দিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। তিনি ৫ লাখ টাকা যৌতুকও দাবি করেন। লিমন পারভেজ প্রতিনিয়ত বিদেশিদের কাছ থেকে কোনো বাধা ও যৌতুক না পেয়ে মুন্নিকে নির্যাতন করে। চলতি মাসের ১৮ তারিখ যশোরের নিউ খয়েরতলা গোরেস্তানপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকার সময় বিদেশি প্রেমিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন লিমন (Limon)। মুন্নি টের পেয়ে তাকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করলে তাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে মুন্নিকে উদ্ধার করে। পরদিন সকালে মুন্নিকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক আনতে তার বাবার বাড়িতে যেতে বলা হয়। মুন্নি টাকা আনতে অস্বীকার করলে তাকে আবারও মারধর করে ঘর থেকে বের করে ঘরে তালা দেওয়া হয়। মুন্নির বাবা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মুন্নির ৪ বছরের মেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা আমার মাকে গলা টিপে ধরেছে। বসে বসে দেখছিলাম।।
মুন্নী বলেন, আমি সুখে সংসার করতে চাই। কিন্তু লিমন পারভেজ পরকীয়ায় জড়িয়ে আমাকে নির্যাতন করে। আমি এর বিচার চাই। আদালতের পেশকার হওয়ার কারণে তিনি আমাদের বলছেন কোথাও গিয়ে নাকি আমরা বিচার পাব না।
তবে এ অভিযোগের আলোকে বিস্তারিত জানতে লিমনের সঙ্গে মুঠো ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে নিজের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে (News media) দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আসা এ অভিযগের কোনো ভিত্তি নেই, এ অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট বলেও দাবি করেন তিনি।